• apnbkm.09@gmail.com
  • +91 9233172388
  • Vidyasagar Pally, Rampurhat
  • Mon-Sat 11:00 A.M - 8:00 P.M

Wednesday, May 30th, 2018

Astro Palmist Numerology Center

দেবী বর্গ ভীমা

দেবী বর্গ ভীমা

সুপ্রভাত
#ইতিহাস ও কিংবদন্তীর দেবী #বর্গভীমা

প্রায় পাঁচ হাজার মন্দিরের আজব দেশ #মেদিনীপুর। কালের করাল গর্ভে সবই আজ ভগ্নস্তূপ। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিহাসকে অস্বীকার করে যে কয়টি আজও বেঁচে আছে পূর্ণ মহিমায়। তার মধ্যে দেবী বর্গভীমা সর্বশ্রেষ্ঠ। ইতিহাস আর কিংবদন্তী পেরিয়ে এ মন্দির আজ পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষের উৎসবক্ষেত্র। এর শ্রেষ্ঠ পূজা শারদীয়া উত্সবে। দেবী বর্গভীমা তখন করালবদনা বরাভয়দায়িনী শক্তিরূপিনী ভীমা, আদ্যাশক্তি মহামায়া।

ইতিহাসের কোন প্রাচীন অক্ষরেখা ধরে কে যেন বলে এ হল বৌদ্ধসংঘারাম। হিন্দুধর্মের পুনরুত্থানে শক্তির আরাধকরা একে রূপান্তরিত করেছে হিন্দু মন্দিরে। যদি তাই হয়, সেও তো বল্লাল সেনের যুগ। কিংবদন্তী নিয়ে যায় আরো কোনো প্রাচীন কথায় পুরাকালে বর্গভীমার জন্য তাম্রলিপ্ত যে একটি বিশিষ্ট সিদ্ধপীঠ হিসেবে প্রকীর্তিত ছিল, তার উল্লেখ পাওয়া যায় ব্রহ্মপুরাণ থেকে। পুরাকালে দেবাদিদেব মহাদেব দক্ষযজ্ঞে ব্রহ্মার পুত্র দক্ষ প্রজাপতিকে নিহত করলে ব্রহ্মহত্যার ফলস্বরূপ শরীর বিশ্লিষ্ট দক্ষের মাথা মহাদেবের হাতে সংসৃষ্ট হয়ে যায়। মহাদেব কোনোপ্রকারেই একে নিজের হাত থেকে বিচ্ছিন্ন না করতে পেরে উদ্দাম নৃত্য করতে থাকেন, তাতেও হাত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে না পেরে পৃথিবীর বিভিন্ন তীর্থে পরিভ্রমণ করতে থাকেন। কিন্ত্ত দক্ষের মাথা তাঁর হাত থেকে কিছুতেই বিশ্লিষ্ট না হওয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে বিষ্ণুর নিকটে উপস্থিত হলেন। তখন বিষ্ণু বললেন :

অহং তে কথয়িষ্যামি যত্র নশ্যতি পাতকং
তত্র গত্বা ক্ষণামুক্তঃ পাপাদ্ধর্গো ভবিষ্যসি।।

অর্থাৎ সেখানে গমন করলে জীব ক্ষণকাল মধ্যে পাপ থেকে মুক্ত হয়, এবং সকল পাপ বিনষ্ট হয়, তোমায় সে স্থানের মাহাত্ম্য বলব। এই বলে বিষ্ণু বললেন :

আস্তি ভারতবর্ষস্য দক্ষিণস্যাং মহাপুরী,
তমোলিপ্তং সমাখ্যাতং গূঢ়ঃ তীর্থ বরং বসেত্।
তত্র স্নাত্বা চিরাদেব সম্যগেষ্যসি মত্পুরীং
জগাম তীর্থরাজস্য দর্শনার্থং মহাশয়।।

অর্থাৎ ভারতবর্ষের দক্ষিণে তমোলিপ্ত (তাম্রলিপ্ত) নামে মহাতীর্থ আছে, তাতে গূঢ়তীর্থ বাস করে। সেখানে স্নান করলে লোকে বৈকুন্ঠে গমন করে। অতএব আপনি তীর্থরাজের দর্শনের জন্য সেখানে যান। মহাদেব একথা ষুনেই তাম্রলিপ্ত হয়ে বর্গভীমা ও বিষ্ণু নারায়ণের মন্দির দুটির মধ্যবর্তী সরসীনীরে অবগাহন করলে দক্ষ শির তাঁর হাত থেকে মুক্ত হল।

মহাভারতের যুগে নরপতি তাম্ররাজ এক ধীবরপত্নীর কাছ থেকে শোনেন আলৌকিক সে কাহিনী। রোজ মরা মাছ কয়েক যোজন দূর থেকে এনে বনের ভেতর এক মন্দিরের পুকুরে ডুবিয়ে সে মাছকে জ্যান্ত করে নেয়। তারপর নিয়ে যায় রাজবাটীতে। রাজা তাম্ররাজ সেই কাহিনী শুনে ধীরবীর সমভিব্যবহারে গিয়ে উপস্থিত হলেন বনের ভেতরের সেই মন্দিরে। প্রতিষ্ঠা করলেন দেবীকে-প্রস্তরময়ী সে দেবীকে স্বমহিমায়।

ঐতিহাসিক হান্টার বলেন, “নূতন রাজা কালুভূঞা নূতন ঠাকুর প্রতিষ্ঠা করিয়া পূজারম্ভ করেন, ঐ ঠাকুর বর্গভীমা নামে বিরাজ করিতেছেন।” আবার A Statiscal Account of Bengal. Vol.-III, p.61-এ আছে ধনপতি সদাগর নাকি এ মন্দির ও এ দেবী প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু কিংবদন্তী যেখানে রাতের ঘুম কেড়ে নেয়, সেখানে ইতিহাস পুরুষের মতো দাঁড়িয়ে থাকে কালাপাহাড়-

”দেবীর উপাসক মহাশয়দিগের নিকট একখন্ড পারসিক ভাষায় লিখিত দলিল রহিয়াছে, ইহাকে তাঁহারা ‘বাদশাহী পঞ্জ’ বলিয়া নির্দেশ করেন। যখন (খ্রীঃ 1567-68) দুরন্ত কালাপাহাড় উড়িষ্যা বিজয় বাসনায় এই দেশে আগমন করিয়াছিলেন, তিনি দেবীকে সন্দর্শন করত প্রীত হইয়া এই দলিল লিখিয়া দিয়াছিলেন।” (বৃহত্তর তাম্রলিপ্তর ইতিহাস : যুধিষ্ঠির জানা (মালীবুড়ো) পৃ. 100)

ইতিহাস আর কিংবদন্তী মেশা কাহিনী বিস্ময়কর, লোমহর্ষক। বালক রাজু, রাজীবলোচনই দামোদরের তটের গ্রামের এক হিন্দু মায়ের আঁচল ধরা আভিমানী ছেলে নবাব দুহিতার প্রেমে মুসলমান হয়েছিলেন – হয়েছিলেন সুলেমান করণানির সেনাপতি।

উড়িষ্যা আভিযানে চণ্ড কালাপাহাড় এক একটি মন্দির, দেবদেউল ধ্বংস করে এগিয়ে চলেছেন রূপনারায়ণের দিকে। তটে শিবির খাঁটালেন। মন্দির চূড়ার দিকে তাকিয়ে আছেন কালাপাহাড়। আর কতক্ষণ ঐ মন্দির দাঁড়িয়ে থাকবে?

একাকী এগিয়ে চললেন কালাপাহাড়। সোপানশ্রেণী আতিক্রম করে মন্দিরের দেবীগৃহের দুয়ারে এসে দাঁড়ালেন কালাপাহাড়। বেলা বাড়ে। কিন্ত্ত একি হল। স্তম্ভিত পাঠান সৈনিকেরা। দেবী বর্গভীমার সম্মুখে এক শীতল সুবাতাসের আশ্রয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন সুলেমান করণানির সেনাপতি কালাপাহাড়।

কি স্বপ্ন দেখে সেদিন জেগে উঠেছিল কালাপাহাড়? দেবী বর্গভীমার কি আদেশ পেয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছিল কালাপাহাড়ের ধ্বংসলীলা। ‘মূর্তিনাশক কালাপাহাড় জীবনে প্রথম ও একমাত্র মূর্তিকে ধ্বংস করতে এসেও ধ্বংস করতে পারেন নি, সেই মূর্তি আজও তমলুকের মন্দিরে আরতির আলোকে প্রতি সন্ধ্যায় দীপ্ত হয়ে ওঠে।’

কালাপাহাড় সম্ভবত জালাল সাহের সময় 1260-এর দিকে বর্তমান ছিলেন। আর রাজেন্দ্রলাল গুপ্ত একটি প্রবন্ধে (সুরেশচন্দ্র সমাজপতি সম্পাদিত ‘সাহিত্য’ পত্রিকায়) লিখেছেন, ‘বর্গভীমা মন্দির পূর্বে বৌদ্ধমন্দির ছিল।’ এখনও যদি কোনো দর্শক মনোযোগ সহকারে দেখেন, দেখবেন মূল মন্দিরের চারদিকে আনেকগুলি ছোট ছোট গৃহ বা বিহার ছিল। কালের আমোঘ নিয়মে তার আনেকগুলি ধ্বংস হলেও দু একটি এখনও টিকে আছে। বর্তমান মন্দিরটিতে সম্ভবত প্রধান আচার্য থাকতেন। মন্দিরের গঠন আনেকটা বুদ্ধগয়ার মন্দিরের মতো।

আরও আনেক রকম ইতিহাস, কিংবদন্তী, প্রবাদ প্রচলিত আছে। সে থাক। এবার বরং আসি এখন মন্দিরে যা আছে, তার বর্ণনায়। বর্গভীমাকে আনেকে চন্ডীতন্ত্রে কথিত ভীমাদেবী বলে মনে করেন। 51 পীঠের মধ্যে তমলুকের বর্গভীমাও একটি পীঠস্থান। এই দেবীর মূর্তি একটি প্রস্তরের সম্মুখভাগ খোদাই করে নির্মাণ করা হয়েছে। এই মূর্তির গঠন উগ্রতারা মূর্তির মতই। প্রতিকৃতিটি কৃষ্ণ প্রস্তরে নির্মিত। এরকম খোদাই করা মূর্তি সচরাচর দেখা যায় না। এই দেবীর ধ্যান ও পূজাদি যোগিনী মন্ত্র ও নীল তন্ত্রানুসারে সম্পাদিত হয়। কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী তাঁর চন্ডীমঙ্গল (অভয়ামঙ্গল) কাব্যে এই দেবী সম্পর্কে লিখেছেন :

“গোকুলে গোমতীনামা তাম্রলিপ্তে বর্গভীমা
উত্তরে বিদিত বিশ্বকায়া।”

সেও তো প্রায় চারশ বছর আগের লেখা।

বর্তমানে মন্দিরটির চারদিকে কিছু সংস্কার করা হলেও মূল প্রাচীন রূপটি অক্ষুন্ন। মন্দিরটি উচ্চতায় প্রায় 60 ফুট। এর দেওয়ালের ভেতরের প্রস্থ 9 ফুট। এটি গোল ছাদ বিশিষ্ট। মন্দিরের চারটি অংশ—

(1) মূল মন্দির
(2) জগমোহন
(3) যজ্ঞ মন্দির
(4) নাট মন্দির।

তবে মনে হয় মন্দিরটির সব অংশ একসঙ্গে তৈরি হয়নি।

মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেলীতে 27টি পোড়ামাটির বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে। এ মন্দির রেখ দেউল রীতির। এখনকার রূপ বিশ্লেষণ করলে মনে হয় দ্বাদশ বা ত্রয়োদশ শতাব্দীর কোনো এক সময় এ মন্দির নির্মিত হয়েছে।

আগেই বলেছি বর্তমানে এ মন্দিরের আনেক সংস্কার করা হয়েছে। বাইরের টেরাকোটার মূর্তিগুলি সিঁদুরে লেপটে গেছে। মূল দেবী মূর্তিও মুখোশ পরানোর ফলে আজ আর দৃষ্ট হয় না।

এখনও দুর্গাপূজার সময় ধূমধাম সহকারে ষোড়শোপচারে পূজা করা হয়। এমন কি মহাষ্টমীর লগ্নে বলীও দেওয়া হয়। মা বর্গভীমা সে রক্ত পান করেন কিনা জানি না। বাইরের হাড়ি কাঠে লাল সিঁদুরের গভীর প্রলেপ। প্রতিদিন প্রহরে প্রহরে ভোগ দেওয়া হয়। আর আজকাল বিবাহ অন্নপ্রাশন উপনয়ন সব অনুষ্ঠানই সরাসরি এই মন্দিরে হয় মহাসমারোহে।

তাই দেবী বর্গভীমা আজ পূর্ব মেদিনীপুরের সবচেয়ে প্রাচীন জাগ্রত জনপ্রিয় দেবী। জনসমাগমে এ মন্দির টেক্কা দিয়েছে জেলার আর সব দেবদেবীকেই।

ACHARYA KUSH MUKHERJEE
RAMPURHAT CHAKLAMATH BIRBHUM (W.B)
PIN NO 731224
GOLD MEDALIST
WHATSAPP NO 9233172388
CONTACT NO 7001608953
ONLINE PORISEVA DEWA HOI rs 1000/=
MY PAGE NAME IS ASTRO-PALMIST-NEUMEROLOGY CENTER
PLEASE LIKE&SARE
Contact with me :www.apnc.co.in
https://m.facebook.com/Astro-Palmist-Neumerology-Center-1569956439973629/?ref=bookmarks



Blog Url:
https://apnc.co.in/blog.php?blog=20180530094053