• apnbkm.09@gmail.com
  • +91 9233172388
  • Vidyasagar Pally, Rampurhat
  • Mon-Sat 11:00 A.M - 8:00 P.M

Friday, September 14th, 2018

Astro Palmist Numerology Center

বগাপঞ্চমী ও মা মনসা

বগাপঞ্চমী ও মা মনসা

শুভ অপরান্থ
আজ বগা পঞ্জমী,মনসা পূজা
মনসা হলেন একজন লৌকিক হিন্দু দেবী। তিনি সর্পদেবী। প্রধানত বাংলা অঞ্চল এবং উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তাঁর পূজা প্রচলিত আছে। সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে, সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্যলাভের উদ্দেশ্যে তাঁর পূজা করা হয়। মনসা ঘট স্থাপন করে পুজো করা হয়। মনসা নাগ-রাজ (সর্পরাজ) বাসুকীর ভগিনী এবং ঋষি জরৎকারুর (জগৎকারু) স্ত্রী ।তাঁর অপর নামগুলি হল বিষহরি বা বিষহরা (বিষ ধ্বংসকারিণী), নিত্যা (চিরন্তনী) ও পদ্মাবতী।

পুরাণ ও কিংবদন্তি অনুসারে, মনসার পিতা শিব ও স্বামী জরৎকারু মনসাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। মনসার সৎ-মা চণ্ডী (শিবের স্ত্রী পার্বতী) তাঁকে ঘৃণা করতেন। এই কারণে মনসা অত্যন্ত উগ্র স্বভাব ও অসুখী এক দেবী। কোনো কোনো ধর্মগ্রন্থে আছে, শিব নয়, ঋষি কাশ্যপ হলেন মনসার পিতা। মনসাকে ভক্তবৎসল বলে বর্ণনা করা হলেও, যিনি তাঁর পূজা করতে অস্বীকার করেন, তাঁর প্রতি তিনি নির্দয়। জন্ম-সংক্রান্ত কারণে মনসার পূর্ণ দেবীত্ব প্রথমে অস্বীকার করা হয়েছিল। তাই মনসার উদ্দেশ্য ছিল দেবী হিসেবে নিজের কর্তৃত্ব স্থাপন করা এবং একটি একনিষ্ঠ মানব ভক্তমণ্ডলী গড়ে তোলা।

দেবী মনসা কে ?
= = = = = = মা মনসার ধ্যান মন্ত্র অনুসারে- ওঁ
দেবীমম্বামহীনাং
শশধরবদনাং চারুকান্তিং বদন্যাম্ ।
হংসারূঢ়মুদারামস
ুললিতবসনাং সর্বদাং সর্বদৈব ।।
স্মেরাস্যাং মণ্ডিতাঙ্গীং কনকমণিগণৈর্মুক্
তয়া চ । প্রবালৈর্বন্দেহ হং সাষ্টনাগামুরুকু চগলাং
ভোগিনীং কামরূপাম্ ।। ( এর অর্থ- সর্প দিগের
মাতা, চন্দ্র বদনা,
সুন্দর কান্তি বিশিষ্টা, বদন্যা, হংস বাহিনী,
উদার স্বভাবা , লোহিত বসনা , সর্বদা সর্ব
অভিষ্ট প্রদায়িনী, সহাস্য বদনা, কণক
মনি মুক্তা প্রবালাদির অলঙ্কার ধারিনী,
অষ্ট নাগ পরিবৃতা, উন্নত কুচ যুগল সম্পন্না ,
সর্পিণী , ইচ্ছা মাত্র রূপ
ধারিনী দেবীকে বন্দনা করি ।) ব্রহ্মবৈবর্ত্ত
পুরাণ, দেবী ভাগবত
পুরানে মনসা দেবীর লীলা ও ঘটনা বর্তমান ।
মহাভারতেও অল্প মনসা দেবীর প্রসঙ্গ
দেখা যায় । মঙ্গল কাব্য
বলে দেবী মনসা হলেন শিবের মানস কন্যা ।
তিনি আবার নাগরাজ বাসুকীর ভগিনী । পদ্ম পাতায়
দেবীর জন্ম বলে দেবীর নাম
পদ্মাবতী । নিজ
কন্যাকে কৈলাশে নিয়ে আসলে দেবী
পার্বতী স
করে মনসার একটি চোখ নষ্ট করে দেন ।
মহাদেব বুঝতে পারেন কৈলাশে থাকলে মনসার
বিপদ হতে পারে তাই তিনি মনসাকে দূরে রেখে
দিয়ে আসেন ।
নেতাই বা নেত্রী নামক এক দাসীকে মনসার
দেখভালের জন্য রাখেন । নেতাই আবার
স্বর্গের দেবতাদের কাপড় কাচেন ।
মানে ইনি ধোপা । দেবী ভাগবত পুরানে আবার
মনসাকে কশ্যপ মুনির কন্যা বলা হয়েছে ।
মহাভারত বলে মনসা দেবী বিবাহিতা । তাঁর
পতির নাম জগৎকারু । তাঁদের একটি পুত্র
সন্তান হয়, তাঁর নাম আস্তিক । একদা সামান্য
কারনে মুনি, মনসাকে পরিত্যাগ করেন । আবার
আস্তিকের প্রসঙ্গ মহাভারতে দেখা যায় ।
রাজা জনমেজয় সর্প নিধন যজ্ঞ আরম্ভ করলে
আস্তিক সর্প কূলের প্রান রক্ষা করেন । মনসা
নামের উৎপত্তি
= = = = = = = = ‘মনস’ শব্দের স্ত্রী লিঙ্গে
‘আপ’ প্রত্যয়
করে মনসা শব্দের ব্যুৎপত্তি । সুতরাং এই দিক
থেকে মনসা মনের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ।
দেবী ভাগবত ও ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ পুরান
বলেন – সর্প ভয় থেকে মনুষ্য দের
উদ্ধারের
জন্য পরম পিতা ব্রহ্মা কশ্যপ মুনিকে বিশেষ মন্ত্র
বিশেষ বা বিদ্যা আবিস্কারের
কথা বলেন । হয়তো এখানে বিষের ঔষধ
আবিস্কারের কথা সেই সাথেও বলা হয় । কশ্যপ
মুনি এই বিষয় নিয়ে গভীর
ভাবে চিন্তা ভাবনা করছিলেন। তখন তাঁর মন
থেকে এক দেবীর সৃষ্টি হয়। তিনটি কারনে
দেবীর নাম হয় মনসা । সা চ কন্যা ভগবতী
কশ্যপস্য চ মানসী ।
তেনৈব মনসা দেবী মনসা বা চ দীব্যতি ।।
মনসা ধ্যায়তে যা চ পরমাত্মানমীশ্বর ম্ । তেন যা
মনসা দেবী তেন যোগেন দীব্যতি ।।
আত্মারামা চ
সা দেবী বৈষ্ণবী সিদ্ধযোগিনী ।
( দেবীভাগবত পুরাণ ) প্রথমতঃ মনসা কশ্যপ মুনির
মানস কন্যা ,
কেননা চিন্তা ভাবনার সময় মুনির মন
থেকে উৎপন্না । দ্বিতীয় মানুষের মন তদীয়
ক্রীড়া ক্ষেত্র , তৃতীয়তঃ নিজেও
মনে মনে পরমাত্মার ধ্যান করেন বলে
দেবীর
নাম মনসা । মন মানুষের শত্রু আবার মন মানুষের
মিত্র
হতে পারে । “মন এব
মনুষ্যানাং কারণং বন্ধমোক্ষয়োঃ।” মন
যদি শুদ্ধ , একাগ্র চিত্ত , নিজ বশীভূত , ভগবৎ
পরায়ণ হয়- ত সেই মন মোক্ষের কারন । তাই
এই মনকে ‘মিত্র’ বলা যাবে । কিন্তু মন যদি অশুদ্ধ,
চঞ্চল , ইন্দ্রিয় পরায়ণ , ভগবৎ
বিমুখ হয়- ত সেই মন নরক গমনের হেতু । এই
মন
হল শত্রু মন । কশ্যপ মুনি মানব কল্যাণের জন্য
ঔষধ আবিস্কারের কথা ভেবেছিলেন- তাই তাঁর
মন থেকে দেবীর সৃষ্টি হল । তাই শাস্ত্রের
এই
শিক্ষা যে, আমাদের সর্বদা কল্যাণকর , হিতকর,
ভগবানের কথা-
ইত্যাদি মনে ভাবনা চিন্তা করতে হবে ।

মঙ্গল কাব্যে মনসা
= = = = = = = মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম
সংযোজন
হল মঙ্গলকাব্য । চৈতন্য পূর্ব যুগেই এই মঙ্গল
কাব্য গুলি রচিত । মঙ্গলকাব্যে দেখা যায়
অবৈদিক দেব দেবী গণ নিজেদের মাহাত্ম্য
প্রচারে নিজেরাই মর্তে এসেছেন ।
ভক্তদের
পূজা নিচ্ছেন , ও তাঁদের সুখ ঐশ্বর্য দিচ্ছেন ।
এছাড়া দারিদ্রতার মাধ্যমে সেই সময়কার
বঙ্গদেশের আর্থিক অবস্থা, সংসারের অনটন ,
রাজকীয় প্রশাসন , বৈদিক – অবৈদিক দেব
দেবী গনের একটা সূত্র কাব্যে বর্তমান ।
‘মঙ্গল’ কথাটির ব্যাখা বা প্রয়োগ
নিয়ে গবেষক গণ বিভিন্ন মত পোষোন
করেন ।
মঙ্গল শব্দ টির আক্ষরিক অর্থ হল ‘কল্যাণ’ ।
কাব্যে যে দেবী মাহাত্ম্য চিত্রিত আছে-
তা পাঠ করলে অথবা শুনলে সংসারে মঙ্গল
হবে । নানা প্রকার অমঙ্গল দূর হবে, মানুষ
পাপমুক্ত হবে। এই মঙ্গল জনক ফল
পাওয়া যাবে । তাই ‘মঙ্গল”
শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে । আবার মঙ্গল
কাব্য গুলি এক মঙ্গল বারে পাঠ শুরু হতো- আবার
পরের মঙ্গলবারে পাঠ সমাপ্ত হতো- তাই
‘মঙ্গল’ শব্দ টির অবতারনা । আবার মঙ্গল নামক এক
বিশেষ রাগিনীর সুরে পাঠ
করা হতো বলে- ‘মঙ্গল’ শব্দ টির আগমন ।
আবার
উল্লেখ্য বিষয় মঙ্গল কাব্যের দেব দেবী
গণ
কেবল নিম্ন বর্ণের হিন্দু জাতির মধ্যেই
পূজা বেশী পেতেন । কিছু স্থানে হিন্দুদের
এই
দেব দেবীগণের পুজায় মুসলিম সম্প্রদায়ের
যোগদানের উল্লেখ দেখা যায় ।
তবে তা নিতান্তই অল্প। মনসা দেবী বা সর্প
দেবী হিসাবে পুজা বোধ
হয় বৌদ্ধ ধর্ম থেকে এসেছে । বৌদ্ধ গ্রন্থেই
সর্প দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায় । ‘বিনয়বস্তু’
ও ‘সাধনমালা’ নামক বৌদ্ধ গ্রন্থে সর্পের
দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায় । এখানে সর্পের
দেবীর বর্ণনা আছে । ‘সাধনমালা’ গ্রন্থে সর্প
দেবীকে ‘জাঙ্গুলি’ বা ‘জাঙ্গুলিতারা’
বলে উল্লেখ করা আছে। প্রাচীন যুগে
সাপের
ওঝাকে বলা হতো জাঙ্গুলিক
( বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস- ডঃ অসিতকুমার
বন্দ্যোপাধ্যায়) । দক্ষিণ ভারতে দ্রাবিড় জাতির
অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন ‘মঞ্চাম্মা’
বা ‘মনোমাঞ্চী’। পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন সেন
শাস্ত্রীর মতে মঞ্চামা নাম থেকেই ‘মনসা’
নামের উৎপত্তি । আবার ডাঃ আশুতোষ
ভট্টাচার্য বৌদ্ধ সর্প দেবী জাঙ্গুলিকেই
‘মনসা’ বলে মানেন । তেঁনার মতে- “অত্যন্ত
প্রাচীনকাল হইতেই এই পূর্ব ভারতীয় বৌদ্ধ
সমাজে জাঙ্গুলীদেবীর পূজা প্রচলিত
হইয়া আসিতেছে । বৌদ্ধ তান্ত্রিক সাধনার
সূত্র গ্রন্থ সাধনমালাতে এই জাঙ্গুলী দেবীর
পূজার প্রকরণ ও তাহার মন্ত্রের
সম্বন্ধে বিস্তৃত উল্লেখ আছে। তাহা হইতে
সহজেই অনুমতি হইতে পারে যে, এই
জাঙ্গুলীদেবী বর্তমানে সমাজে পূজিতা সর্প
দেবী । ” গবেষক দের মতে মনসা অনার্য
দেবতা, পরে আর্য দের পুরানে স্থান
পেয়েছেন
। গবেষকরা বলেন বঙ্গদেশ ছিল জঙ্গলে ভরা

সাপের উপদ্রব ছিল বেশী । বাংলা ছিল
কৃষি প্রধান । এই বিষাক্ত সাপেদের সাথেই
তাঁদের বসবাস ও দ্বন্দ্ব । একটি বিষাক্ত
প্রানী, যার ছোবোলেই মৃত্যু। তাই
মনসা পূজা বঙ্গদেশে বিশেষ প্রসার পায় । ত্রিপুরা,
ওড়িশা, আসাম , দুই বঙ্গ, বিহারে এই
পূজোর প্রচলন বেশী । হিমালয়ের
পাদদেশে জঙ্গলে ছিল সাপেদের অবাধ বিচরণ
ভূমি । মানুষের বসতি বাড়লো, সাপেদের
সাথে সংঘাত বাড়লো । প্রথমে নিম্ন জাতির
মধ্যে এই পূজোর প্রসার থাকলে কালক্রমে
ব্রাহ্মণ্য দেবী হয়ে ওঠেন
মা মনসা । চাঁদ বেনে ও মা মনসা
= = = = = = = = = গবেষক গণ বলেন উচ্চ
সমাজে পূজো পাবার জন্য
মনসা চাঁদ বেনের কাছে পূজা চাইছিলেন ।
কিন্তু মনসামঙ্গল কাব্য বলে অন্য কথা । স্বর্গ
সভায় সমস্ত দেব দেবতার আসন আছে ।
সকলেই
স্বর্গে আসতে পারেন । কিন্তু মনসার কোন
আসন
নেই, তাঁর অধিকারও নেই স্বর্গে প্রবেশের ।
কারন মর্তে পূজা না পেলে স্বর্গে কোন
ভাবে আসন দেওয়ার নিয়ম নেই । আর
এক্ষেত্রে মা মনসাকে শর্ত দেওয়া হল- চম্পক
নগরের অধিপতি চাঁদ সদাগর ওরফে চাঁদ
বেনে যদি মনসার পূজো করেন, তবেই
পৃথিবীতে মনসা পূজোর সূত্রপাত হবে এবং
দেবী মনসা স্বর্গে এসে আসনে বসতে
। দেবী চাঁদের কাছে গিয়ে পূজা দেবার
কথা বললেন । কিন্তু মুস্কিল হল- চাঁদ
বেনে পরম শৈব । ভগবান শিব ভিন্ন
তিনি কারোর কাছেই মাথা নোয়ান না, কারোর
পূজো করেনও না । তিনি ত না করে দিলেন ।
মনসা দেবী ভয় দেখালেও চাঁদ বেনে
কোন
মতেই রাজী হলেন না । চাঁদের
স্ত্রী সনকা একদিন
গোপোনে মনসা পূজা করছিলেন ।
জানতে পেরে চাঁদ এসে পদাঘাতে ঘট
ভেঙ্গে ,
পূজার সামগ্রী সব নষ্ট করে স্ত্রীকে খুব
বকা ঝকা করে মনসা পূজো করতে মানা করলেন

ক্ষিপ্ত হয়ে দেবী মনসা চাঁদের সপ্ত
ডিঙ্গা ডুবিয়ে দিলেন । চাঁদের ছয়
ছেলেকে মেরে ফেললেন ।
মা মনসা চাঁদকে বললেন – পূজো দিলেই সব
ফেরত পাবে। কিন্তু চাঁদ দমল না। মনসা কে
নাগিনী, চেঙ মুড়িকানী,
কানী বলে গালাগালি দিয়ে ঘৃনা ভরে সেই
প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করলেন । চাঁদের
উক্তি – যেই হাতে পূজি আমি দেব শূলপাণি ।
সেই হাতে নাহি পূজি চেঙ মুড়িকানী ।। মনসা
দেবী পূজা নেবার জন্য অন্য উপায়
খুঁজতে লাগলেন । এর মধ্যে স্বর্গের এক
নর্তক
আর এক নর্তকী শাপভ্রষ্ট হয়ে মর্তে জন্ম
নিলেন । নর্তক অনিরুদ্ধ, লখিন্দর রূপে চাঁদ
সদাগরের স্ত্রী সনকার পুত্র রূপে জন্মালেন ।
আর নর্তকী উষা উজানী নগরে বনিক সায়
বেণের কণ্যা বেহুলা রূপে জন্মালেন ।
কালক্রমে এঁদের বিবাহ হল । চাঁদ জানতেন
মনসা আবার ছোবোল মারতে পারেন । তাই
বিশ্বকর্মা কে দিয়ে লোহার বাসর ঘর
বানালেন । বিশ্বকর্মা মনসার ক্রোধ
সম্বন্ধে ভালোভাবেই জানতেন । তিনি মনসা
দেবীর ইচ্ছামতো বাসর
ঘরে ছোট্ট একটি ছিদ্র রাখলেন ।
রাতে কালনাগিনী এসে লখিন্দরকে ছোবলে
মে
পরদিন কান্নার রোল উঠলো ।
মনসা চাঁদকে পূজা করতে বলেন । চাঁদ তখনও
মনসাকে গালাগালি করে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে
বললেন- কি করিব পুত্রে মোর কি করিব ধনে ।
না পূজিব পদ্মাবতী দৃঢ় কৈনু মনে ।। বেহুলা এর পর
কলার ভেলায় স্বামীর দেহ
নিয়ে স্বর্গের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন ।
কারন মা মনসা তাঁকে স্বপ্নে বলেছিলেন
স্বর্গে গেলে লখিন্দর বাঁচবে । একসময়
ধোপানী নেতির
মাধ্যমে বেহুলা স্বর্গে গিয়ে নৃত্য করে
দেবতাদের প্রসন্ন করে বর দান স্বরূপ
স্বামীর প্রান চাইলেন ।
মা মনসা ফিরিয়ে দিলেন । একটি শর্তে । চাঁদ
যেন অবশ্যই মনসার পূজো করে।।
মনসা দেবী চাঁদের ছয় পুত্রের প্রান, সপ্ত
ডিঙ্গা , হারানো ধন সব ফিরিয়ে দিলেন । বাড়ী
এসে বেহুলা শ্বশুর চাঁদ
বেনেকে রাজী করালেন । চাঁদ বেনে বাম
হাত
দিয়ে পিছন ফিরে দেবী মনসার পূজা দিলেন ।
পৃথিবীতে মনসা পূজো শুরু হল । মহাসতী
বেহুলা
= = = = = = = সতী নারীর জীবন চরিত্র
নারীর কাছে আদর্শ
। যুগ যুগ ধরে এই
সতী নারীরা পৃথিবীতে এসেছেন ।
নারী দিগের কাছে চরিত্র, পতিব্রতার ধর্ম ,
আদর্শ গৃহস্থিনী , আত্ম ত্যাগ , বীরত্ব এর
দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন । অনুসূর্যার ঘটনা
আমরা পাই । নিজ সতীত্ব ধর্মে ত্রিদেব
কে শিশু করেছিলেন, , শকুন্তলা , দময়ন্তী ,
সীতা , রেনুকা, যম বিজেতা সাবিত্রী ,
সীতাদেবী। যারা যুগে যুগে নারী ধর্মের
স্থাপনা করেছেন নিজের জীবনে পালন
করে ।
মহাসতী বেহুলা তাঁর ব্যতিক্রম নয় । তিনি সতীত্ব
তেজে মৃত্যুর পর পার
থেকে স্বামীকে এনেছেন। মনসামঙ্গল
কাব্য
অনুসারে চাঁদ সদাগর যখন
বেহুলা কে লখিন্দরের বিবাহের জন্য
দেখতে গেছিলেন , তখন তিনি লোহার কলাই
সেদ্ধ করতে বলেছিলেন । বেহুলা করে
দেখিয়েছিলেন । কন্টকের ওপর
নৃত্য করেছিলেন । গাঙ্গুরে যখন
ভেলা ভাসালেন অনেক পাপী তাঁর রূপ
দেখে মত্ত হয়ে ধরতে এসেছিল । কিন্তু
বেহুলার সতীত্ব তেজ এমন- তাঁকে কেউ
স্পর্শ
করতে পারেনি । জীবিত দেহে স্বর্গে
প্রবেশ করে নৃত্য দ্বারা দেব দেবীদের
সন্তুষ্ট
করেছিলেন । তাই বেহুলা চরিত্র বঙ্গদেশ
তথা হিন্দু নারী গনের কাছে পরম আদর্শ ,
বরণীয়া ।

বিষহরী মা মনসা
= = = = = = = মা মনসার
স্তবে তাঁকে বিষহরী বলা হয়েছে ।
তিনি বিষ হরণ করেন । বর্ষাকালে পথ ঘাট
জলে জলমগ্ন । ব্যাঙ্গের প্রাদুর্ভাব ও
তার সাথে সর্প কুলের আনাগোনা । এখনও
দেশে সর্পাঘাতে মারা যান মানুষ । তাই এই সর্প
কূলের থেকে বাঁচবার জন্য
মা একমাত্র গতি । তিনি বিষাক্ত ফনীদের
বিষ থেকে রক্ষা করবেন সন্তান দের ।
পূর্বেই বলা হয়েছে কশ্যপ মুনি সাপের
বিষের প্রতিষেধক আবিস্কারের সময় মনের
থেকেই মা মনসার সৃষ্টি । এর
থেকে অনুমান করা যায় প্রাচীন কাল
থেকেই ভারতবর্ষে ঋষি সমাজে সর্প বিষের
ঔষধের উপাদান ছিল । সে মন্ত্র, ঔষধি, ক্রিয়া , দৈব
– এই চারটি বিষয়ের ওপর
নির্ভরশীল ছিল । এগুলোর
সাথে যদি মা মনসার কৃপা পাওয়া যেতো,
তবেই কাজে লাগতো ।
পুন্যভূমি ভারতবর্ষে কোন কাজই
ভগবানকে বাদ রেখে হয় না, সে কারিগরি ,
চিকিৎসা, প্রযুক্তি যাই হতো । সাপের
বিষের চিকিৎসায় অবশ্যই মা মনসার নাম
নিয়ে শুরু হতো । তাই
মা মনসাকে বিষহরী বলা হয় । কারন মায়ের
কৃপাতেই বিষ দূর হবে ঔষধ কাজ শুরু
করবে । মা মনসার কাছে অষ্টনাগ থাকে । এগুলির
নাম অনন্ত, বাসুকি, পদ্ম,
মহাপদ্ম, তক্ষক, কুলীর, কর্কট ও শঙ্খ ।
সে জন্যই নাগেশ্বরী মা মনসার শরণ
নিলে নাগভয় থাকে না । শুধু কি সাপের বিষই বিষ ?
এর থেকেও বড়
বিষ আমাদের অন্তরে । স্বার্থপরতা ,
কাপুরুষতা , হিংসা , গর্ব , কুবুদ্ধি ।
এগুলো সাপের বিষের থেকে কম ভয়ানক না ।
কশ্যপ মুনি মানব কল্যাণের জন্য ঔষধের
আবিস্কারের কথা ভাবছিলেন – তখন তার মন
থেকে দেবীর সৃষ্টি ।
তাহলে আমরা যদি মনে সর্বদা সুবুদ্ধি ও
কল্যাণকর চিন্তা রাখি তাহলে আমরা আরও
ঈশ্বরের কাছে এগিয়ে যাবো । তাই মায়ের
কাছে প্রার্থনা তিনি যেনো অন্তর থেকেও
এই বিষ হরণ করেন । নাগবেষ্টিতা মনসা মা
= = = = = = = = নাগের সাথে যোগের
অনেক সম্পর্ক আছে ।
নাগ গণ একচারী, অনিকেত, সাবধান ও গর্ত
বাসী । শীতের কটি মাস তারা কেবল বায়ূ
ভক্ষণ করে বা সামনাসামনি যা আসে তাই
খায়। সর্পের মতো জীবন যোগীদেরও
দেখা যায় । যোগীরা ঘর বাঁধেন না। পাহাড়ের
গুহায় বা অরন্যে বাস করেন ।
কুম্ভক যোগে প্রানবায়ু নিরোধ
করে যোগবলে ঘুমন্ত
কুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগরণের জন্য তপ
রত। জাগ্রত অবস্থায় এই
কুন্ডলিনী শক্তি তির্যক ঊর্ধ্ব মুখী। পুরান
বলেন দেবী মনসা মহা যোগিনী,
অনিমাদি যোগসিদ্ধ নিত্য বর্তমান ।
মা মনসা যোগবলে ইচ্ছা মতন রূপ ধারন
করতে পারেন । সর্প হল যোগের প্রতীক ।
মনসার দীক্ষা গুরু হলেন মহাদেব ।
মহাদেব মা মনসাকে কৃষ্ণ মন্ত্রে দীক্ষা
দিয়েছেন । মা মনসার
গুরুও সর্প মাল্য গলাতে ধারন করেন । এই
মহাযোগের প্রতীক স্বরূপ মা সর্প
ভূষিতা । জ্ঞান- শক্তি- ভক্তি- যোগের সমন্বয়
মা মনসা
= = = = = = = = = = = = = = = = = = মনসা
দেবীর স্তোত্রে বলা হয়েছে –
জগৎকারুজগদগৌরী মনসা সিদ্ধযোগিনী ।
বৈষ্ণবী নাগভগিনী শৈবী নাগেশ্বরী তথা
জগৎকারুপ্রিয়াস্ তিকমাতা বিষহরীত চ । মহাজ্ঞানযুতা
চৈব
সা দেবী বিশ্বপূজিতা ।।
দ্বাদশৈতানি নামানি পূজাকালে য
যঃ পঠেৎ ।
তস্য নাগভয়ং নাস্তি তস্য বংশোদ্ভবস্য
চ ।। ( অর্থাৎ- জগতকারু, জগদগৌরী, মনসা,
সিদ্ধ যোগিনী , বৈষ্ণবী , নাগভগিনী।
শৈবী, নাগেশ্বরী , জগতকারুপ্রিয়া ,
আস্তীক মাতা, বিষহরী ও মহাজ্ঞান যুতা-
এই দ্বাদশ নামে দেবী খ্যাতা ও বিশ্ব
পূজিতা। পূজাকালে এই নামাবলী যিনি পাঠ করেন, তাঁর
বা তার বংশধর গনের কখনো সর্প
ভয় থাকে না । ) পূর্বে বলা হয়েছে মনসা
দেবী হলেন মনন
শক্তির অধিষ্ঠাত্রী দেবী-
তিনি মনো ময়ী । মনের সাহাযেই বিচার
করে আমরা জ্ঞান কে আবিস্কারের
কাজে লাগাই । মনে আবিস্কারের চিন্তা,
একাগ্রতা – ফল স্বরূপ আবিস্কার । যোগ বিধৃত মন
শক্তির আধার । মনসা মনের
দেবী বলে জ্ঞান ও শক্তি দুই
তাতে রয়েছে । মা মনসার অপর একটি ধ্যান মন্ত্র
অনুসারে বলা হয়- শ্বেতচম্পকবর্ণা
ভাং রত্নভূষণভূষিতাং । বহ্নিশুদ্ধাং শুকাধানাং
নাগযজ্ঞোপবীত ং ।। মহাজ্ঞানযুতাঞ্চ ৈব প্রবরাং
জ্ঞানিনাং সতাম্ ।
সিদ্ধাধিষ্ঠাতৃদ েবীঞ্চ সিদ্ধাং সিদ্ধিপ্রদাং ভজে ।।
( এর অর্থ- যার অঙ্গ বর্ণ শ্বেত চম্পকের
মতো শুভ্র, যিনি বহু মূল্যবান রত্ন
ভূষনে ভূষিতা, যনি অগ্নির ন্যায় শুদ্ধ
বসন পরিহিতা , যিনি নাগ রূপ উপবীত ধারন
করেন, যিনি মহাজ্ঞান
যুতা এবং জ্ঞানী সাধু দিগেরও বরণীয়া , যিনি
সিদ্ধাধিষ্ঠিাত্
রী এবং সিদ্ধি প্রদা, সেই
দেবীকে ভজনা করি । ) মা মনসার এই ধ্যান
মন্ত্রে মাকে ‘অরুনিতবসনা’
এবং তিনি ‘শ্বেতচম্পকবর্ণ াভা’ বলা হয়েছে ।
অর্থাৎ মায়ের পরিহিত
বস্ত্র রক্ত বর্ণ , এবং মায়ের অঙ্গ
শ্বেত বর্ণ । রক্ত বর্ণ শক্তির প্রতীক
(সে জন্য শক্তি উপাসক ও সাধিকা গণ রক্ত
বর্ণ বস্ত্র পড়েন )। আর শ্বেত বর্ণ
জ্ঞানের প্রতীক ( মা সরস্বতী জ্ঞানের
দেবী, তাই তিনি শ্বেত বস্ত্র পড়েন) ।
যোগিনী রূপে তিনি কুল
কুন্ডলিনী ভেদিকা – শক্তির
সাধিকা ( শক্তির সাধক গণ কুল
কুণ্ডলিনীর জাগরণের সাধনা করেন) । নাগ
যজ্ঞ পবীত ধারিনী ।নাগ হল কুন্ডলিনী শক্তির
প্রতীক।
এখানে মা মনসার
যোগিনী রূপটি ফুটে ওঠে । তিনি জ্ঞানের
অধিকারিনী- তাই জ্ঞানী সাধু গণ
মাকে বন্দনা করেন । আবার তিনি শিবের
শিষ্যা । যেহেতু মহাদেব মা মনসাকে কৃষ্ণ
মন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন । শিবের
শিষ্যা শৈবী রূপে তিনি পরম বৈরাগ্য
ময়ী । মহাদেবের শিষ্যা রূপে তিনি সর্ব
ত্যাগ ময়ী- ত্যাগের আদর্শ , চির সুন্দর,
যোগেশ্বরী । আবার তিনি কৃষ্ণ মন্ত্রে
দীক্ষিতা ।
তিনি বৈষ্ণবী রূপে ভক্তির আদর্শ ।
সুতরাং মনসা দেবীর কাছে শুধু নাগ
বিষের জ্বালা নিবারন চাইবো না ।
চাইবো অন্তরের কুটিলামি বিষ, সংসারের
ত্রিতাপ জ্বালার নিবারন । হংস কেন মা মনসার বাহন ?
= = = = = = = = = = = = = সরস্বতীর বাহন হংস
, মা মনসার বাহন হংস
। পূর্ব
সিদ্ধান্তে দেখতে পারি তিনি জ্ঞানদা ম
শ্বেত বর্ণ জ্ঞানের প্রতীক । হংসের
বর্ণ শ্বেত । তাই সে মায়ের বাহন । হংস
জলে স্থলে অবাধে যেতে পারে । আবার
এক শ্রেনীর হংস উড়তে সক্ষম । জ্ঞান, কর্ম,
ভক্তি, যোগ- যেই অবস্থার হোক না কেন-
সাধক মাত্রের তিনটি অবস্থা-
সাধনাবস্থা, সিদ্ধাবস্থা ও
মুক্তাবস্থা । কথিত আছে হংসকে জল ও দুধ
মিশিয়ে দিলে সে জলের থেকে কেবল দুধ
টুকুই গ্রহণ করে, তেমনই সাধক সংসার
থেকে অসার কে ত্যাগ পূর্বক সার কেই
গ্রহণ করে । যোগীর বিচারে আত্মা,
ভক্তের বিচারে ভগবান, জ্ঞানীর
বিচারে পরম ব্রহ্মই একমাত্র নিত্য-
বাকী সব অনিত্য । হংস যেরূপ জল ত্যাগ করে
দুধ গ্রহণ করে তেমনই জ্ঞানী গণ
অসার ত্যাগ করেন , অনিত্য কে ত্যাগ
করে নিত্য লাভের পথে অগ্রসর হন । এদিক
থেকে হংস সেই মহা যোগ ময়ী দেবীর
বাহন
হবার যোগ্য । হংস জল স্থল অন্তরীক্ষ সর্বত্র
যেতে পারে, তেমনই সাধক সিদ্ধ অবস্থায়
এমন উদারতা অর্জন করে যে তিনি সর্ব
ভূতে ঈশ্বরকে দেখেন । সিদ্ধ সাধকের মন
ভেদ গণ্ডির মধ্যে থাকে না , তার
উদারতা সর্বত্রই একই ভাবে গতিমান , ঠিক যেমন
হংসের সর্বত্র গতি।
কুণ্ডলিনী শক্তির ভেদিকা মায়ের
যথার্থ বাহন হিসাবে হংস এদিক
থেকে মানান সই । উপনিষদের বানী হল হংস হল
পরমাত্মার
প্রতীক । তত্ত্বসম জ্ঞান-অহং স: জপের
দ্বারাই তাঁরা পরমহংস হন। হাঁস
মনসা মায়ের বাহনরূপে নির্ধারিত
হয়েছে হাঁসের যোগ্যতার কারণেই ।

পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র :এষ সচন্দনগম্ধপুষ্পাঞ্জলি ওঁ মং মনসাদের্য নমঃ | ৩ বার
প্রণাম: ওঁ অযোনিসম্ভবে মার্তমহেশ্বরসুতে শুভে ৷ পন্মালয়ে নমস্তূভ‍্যং রক্ষ মাং বৃজিনার্ণবাৎ। আস্তিকস্য মুনের্মাতা ভগিনী বাসুকেস্তথা।জরৎকারুমনেঃ পত্নী মনসাদেবী নমোহস্তূতে | বিসর্জনঃ সংহার মুদ্রা দেখিয়ে বলবেন, "মনসাদেবী ক্ষমস্ব"

[6/3, 16:06] Acharya Kush Mukherjee: ACHARYA KUSH MUKHERJEE
RAMPURHAT CHAKLAMATH BIRBHUM (W.B)
PIN NO 731224
GOLD MEDALIST
WHATSAPP NO 9233172388
CONTACT NO 7001608953
ONLINE PORISEVA DEWA HOI rs 1000/=
MY PAGE NAME IS ASTRO-PALMIST-NEUMEROLOGY CENTER
PLEASE LIKE&SARE
Contact with me :www.apnc.co.in
https://m.facebook.com/Astro-Palmist-Neumerology-Center-1569956439973629/?ref=bookmarks



Blog Url:
https://apnc.co.in/blog.php?blog=20180914134933