• apnbkm.09@gmail.com
  • +91 9233172388
  • Vidyasagar Pally, Rampurhat
  • Mon-Sat 11:00 A.M - 8:00 P.M

Thursday, September 26th, 2019

Astro Palmist Numerology Center

ভারতীয় জোতিষ শ্রাস্ত্রের শ্রষ্ঠারা ও বিজ্ঞান ভিত্তক গ্ৰহন যোগ্যতা

সুপ্রভাত
আজকে আমি আপনাদের কাছে ভারতীয় জোতিষ শ্রাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করবো।প্রথমেই বলে রাখি শ্রাস্ত্র টির গভিরতা ও পৌরাণিক তত্ত্ব অনুযায়ী একে সামুদ্রিক শ্রাস্ত্র বলা।বেদ,উপনিষদ ও আমাদের সমস্ত ধর্মগ্ৰন্থে জোতিষ শ্রাস্ত্রের উল্লেখ আছে।এই শ্রাস্ত্রের দিকপাল রা হলেন ঋষি ভৃগু, ঋষি পরাশর,ঋষি কনাদ, অষ্টবক্রমুনি,বরাহমিহির,আর্যভট্ট,লিলাবতী ।যারা এই শ্রাস্ত্রের গানিতিক প্রয়োগ করে প্রমাণ করেছেন শ্রাস্ত্রের শুভ দিক।তাদের নিয়ে আমার আজকের প্রতিবেদন।আমার দীর্ঘ ৩৬ বৎসরের অভিজ্ঞতা ও অধ্যায়ন আমাকে এই শ্রাস্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তুলেছে।আপনাদের ভালো লাগার জন্য আমার এই প্রয়াস।ঐ মহান মুনি ঋষি দের নিয়ে আজকের লেখা,অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, গানিতিক প্রয়োগে সমৃদ্ধ, আমাদের গর্বের বেদ,উপনিষদ,রামায়ণ ওমহাভারত সমস্ত ধর্তগ্ৰন্থে সমাদৃত, নালন্দা, তক্ষশীলা,ও বিক্ষমশীলা প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ‍্য এই মহান শ্রাস্ত্র কে আমরা জানার ও মনের গভীরে জায়গা করে দিই।এই শ্রাস্ত্রের প্রয়োগে রয়েছে দীর্ঘ অধ‍্যায়ন(কমকরে ৩০-৪০ বৎসর),নিষ্ঠা ও সৎচিন্তা ভাবনা।যা বর্তমানে খুব কম দেখা যায়,বতর্মানে প্রচারের আবরনে ঢাকা পরে গিয়েছে এর গুনগতমান।(এই শ্রাস্ত্রের প্রতি সকলকে উৎসাহিত করাই আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য) ।

****ভারতীয় জোতিষ শ্রাস্ত্রের শ্রষ্টা ও গুরুত্ব****

১)ঋষি ভৃগু
ভৃগু নিয়ে ধর্ম শাস্ত্র যা বলেছে তার শুরুতেই পাই ভৃগু কর্ত্তৃক মনু-সংহিতা কথনারম্ভ-

“ততস্তথা স তেনোক্তো মহর্ষিমনুনা ভৃগুঃ ।
তানব্রবীদ্ ঋষীন্ সর্বান্ প্রীতাত্মা শ্রূযতামিতি ।।৬০”

অর্থ: অনন্তর মহর্ষি ভৃগু ভগবান মনু কর্ত্তৃক এই প্রকার অভিহিত হইয়া ‘শ্রবণ করুন’ বলিয়া তাঁহাদিগকে বলিতে লাগিলেন। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে– প্রজাপতি, ঋষি এবং ভার্গব বংশের প্রতিষ্ঠাতা। ভৃগুকে ধনুর্বেদ বিদ্যার জনক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

একবার ব্রহ্মা বরুণের একটি যজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজন করলে, ভৃগু উক্ত যজ্ঞ থেকে জন্মগ্রহণ করেন। এঁর স্ত্রীর নাম ছিল পুলোমা। উল্লেখ্য, ভৃগুর স্ত্রী হওয়ার পূর্বে পুলোমা নামক এক রাক্ষস এঁকে বিবাহ করার জন্য প্রস্তাব পাঠান। কিন্তু পুলোমা'র পিতা রাক্ষস-পুলোমার হাতে কন্যাকে সমর্পণ না করে ভৃগুর সাথে বিবাহ দেন। ফলে রাক্ষস ভৃগুপত্নীকে অপহরণের সুযোগ খুঁজতে থাকেন। একবার গর্ভবতী পুলোমাকে ঘরে রেখে ভৃগু স্নানে যান। ভৃগু যাবার সময় ঘরের অধিষ্ঠিত অগ্নির উপর স্ত্রীর রক্ষাভার দিয়ে যান। এই সুযোগে রাক্ষস পুলোমা ভৃগুপত্নীকে অপহরণ করতে আসেন। তিনি অগ্নির কাছে প্রশ্ন করেন যে, পূর্বে আমি এই কন্যাকে স্ত্রী হিসাবে পাওয়ার জন্য মনে মনে বরণ করেছিলাম। এরপর ভৃগু একে স্ত্রী হিসাবে লাভ করেন। আইনত পুলোমা (ভৃগুপত্নী) তাঁরই স্ত্রী হওয়া উচিৎ। উত্তরে অগ্নি বলেন যে,– যেহেতু মন্ত্রপাঠ করে তুমি তাঁকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ কর নি তাই সে তোমার স্ত্রী নয়। এরপর রাক্ষস বরাহরূপ ধারণ করে, ভৃগুপত্নীকে অপহরণ করে রওনা হন। কিন্তু পথিমধ্যে ভৃগুপত্নী'র গর্ভস্থ সন্তান চ্যাবন ভূমিষ্ট হয় এবং চ্যাবনেরর তেজে এই রাক্ষস ভস্মীভূত হয়। ভৃগু গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর, কেন অগ্নি তাঁর স্ত্রী পুলোমাকে রক্ষা করেন নাই, এই কারণে অগ্নিকে 'সর্বভুক্ হও' অভিশাপ দেন। এরপর অগ্নি নিজেকে অগ্নিহোত্র যজ্ঞ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেন। ফলে দেবতারা হব্য থেকে বঞ্চিত হতে থাকলে- ব্রহ্মা অগ্নিকে বলেন যে, কেবলমাত্র গুহ্যদেশের শিখা ও ক্রব্যাদ (মাংসভক্ষক) শরীর সর্বভুক হবে এবং মুখে যে আহুতি দেওয়া হবে, তাই দেবগণের ভাগরূপে গৃহীত হবে।
[মহাভারত, আদিপর্ব, পঞ্চম-সপ্তম অধ্যায়। ] ১

বিষ্ণুপুরাণের মতে– ইনি ব্রহ্মার মানস পুত্র। মনু সংহিতার মতে ইনি দশজন প্রজাপতির অন্যতম। ইনি কর্দমের কন্যা খ্যাতিকে বিবাহ করেছিলেন। খ্যাতির গর্ভে তাঁর দুটি পুত্র এবং একটি কন্যা জন্মে। দুই পুত্রের নাম ছিল– ধাতা ও বিধাতা এবং কন্যার নাম ছিল লক্ষ্মী। লক্ষ্মীর সাথে বিষ্ণুর বিবাহ হয়।
[বিষ্ণুপুরাণ। দশম অধ্যায়। ভৃগু আদি বংশ পর্যায়]

কবার বীতহব্য নামক এক রাজা প্রতর্দন নাম এক রাজপুত্রের কাছে পরাজিত হয়ে ভৃগুর শরণাপন্ন হন। প্রতর্দন পরাজিত শত্রুকে খুঁজতে খূঁজতে ভৃগুর আশ্রমে এলে– ইনি বীতহব্যকে রক্ষার করার জন্য বলেন, তাঁর আশ্রমে ব্রাহ্মণ ভিন্ন কোন ক্ষত্রিয় নাই। ভৃগুর এই বাক্যের প্রভাবে বীতহব্য ব্রাহ্মণত্ব লাভ করেন। একবার দেবতারা ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের মধ্যেকে শ্রেষ্ঠ কে, তা জানার জন্য ভৃগুর শরণাপন্ন হন। ভৃগু এই তিন দেবতাদের পরীক্ষার জন্য প্রথমে ব্রহ্মার কাছে যান। ইনি ইচ্ছা পূর্বক ব্রহ্মার প্রতি সম্মান না দেখালে, ব্রহ্মা তাঁর প্রতি তীব্র ক্রোধ প্রকাশ করেন। পরে স্তব দ্বারা তাঁকে সন্তুষ্ট করে মহাদেবেরর কাছে যান। মহাদেবকে সম্মান না দেখানোর কারণে, মহাদেব তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হন। এবারও ভৃগু স্তব করে মহাদেবকে সন্তুষ্ট করেন। এরপর ইনি বিষ্ণুকে পরীক্ষা করার বিষ্ণুর আবাসস্থল গোলকধামে যান। সেখানে বিষ্ণুকে নিদ্রিত অবস্থায় দেখে ইনি বিষ্ণুর বক্ষে পদাঘাত করেন।

বিষ্ণু ঘুম থেকে জেগে উঠে ভৃগুর পায়ে আঘাত লেগেছে মনে করে তাঁর পদসেবা করতে থাকেন। এরপর ভৃগু বিষ্ণুকেই শ্রেষ্ঠ দেবতা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। উল্লেখ্য এরপর থেকে বিষ্ণুর বুকে ভৃগুর পদচিহ্ন আঁকা রয়েছে।

ভগবান শ্রী বিষ্ণু বা গোপালের বিগ্রহ তৈরি করা হয় তখনি ভগবানের ডান বক্ষের দিকে ভৃগু মুনির চরন অংকন করা হয়। ভৃগু মুনির চরন ছাড়া গোপাল ঠাকুরের বিগ্রহ হয় না।

হিন্দু পুরাণে বিখ্যাত বা কুখ্যাত অভিশাপগুলোর কাহিনীতেও ভৃগু, তাঁর পত্নী, সন্তানদের প্রসংগ এসেছে বহুভাবে।

একবার দেবতা ও দৈত্যদের দুর্দান্ত যুদ্ধ চলছিল | দেবরাজ ইন্দ্রের নেতৃত্বে সুরকুল বীরবিক্রমে এগিয়ে চলেছে | ক্রমশ পশ্চাদপটে চলে যাচ্ছে দৈত্য বংশ | তাঁদের গুরু শুক্রাচার্য অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে গেলেন মহাদেবের নিকট | তাঁর কৃপা প্রার্থনা করলেন | যাতে যুদ্ধে জয়লাভ করে দেবতাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে আনা যায় মৃত সঞ্জীবনী সিদ্ধি |
শুক্রাচার্য চলে যাওয়ায় অরক্ষিত হয়ে পড়ল অসুরদের আবাস স্থল | এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাঁদের আক্রমণ করলেন দেবতারা | দিকভ্রান্ত হয়ে দৈত্যরা গেলেন ভৃগুপত্নীর কাছে | পুরাণে কোথাও তিনি কাব্য | কোথাও দিব্য | তিনি আচার্য শুক্রের মাতা | তাঁর কাছে বরাভয় ও আশ্রয় প্রর্থনা করলেন দৈত্যকুল |
ভৃগুপত্নী আশ্বস্ত করলেন দৈত্যদের | ঐশী ক্ষমতায় দেবতাদের তিনি স্থবির করে দিলেন | চলৎশক্তিহীন হয়ে স্থানুবৎ রইলেন দেবতারা | সেই সুযোগে পাল্টা আঘাত হানলেন দৈত্যরা | লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল স্বর্গলোক |
চলন শক্তিহীন দেবতারা মনে মনে প্রার্থনা করলেন ভগবান বিষ্ণু সমীপে | ভগবান বুঝলেন তাঁকে খুব সাবধানে অগ্রসর হতে হবে | কারণ ভৃগুপত্নী একজন নারী | বিষ্ণু দেবতা হয়ে একজন নারীকে আঘাত করতে পারেন না | এদিকে ভৃগুপত্নীর মৃত্যু না হলে দেবতারা চলনক্ষম হবেন না |
শ্রী বিষ্ণু এরপর ভয়ঙ্কর পশুর রূপে আক্রমণ করলেন ভৃগুপত্নীকে | আচার্যানী বুঝলেন তাঁর সামনে অবতাররূপী স্বয়ং বিষ্ণু | কিন্তু তিনি অভিশাপ দেওয়ার আগেই বিষ্ণু তাঁর মস্তক ছিন্ন করেন সুদর্শন চক্রে |
নিহত স্ত্রীর নিষ্প্রাণ দেহে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন আচার্য ভৃগু | কমণ্ডলু থেকে মন্ত্রপুত জলের স্পর্শে |
ক্রোধে অন্ধ হয়ে তিনি শ্রী বিষ্ণুকে অভিশাপ দেন | তিনি যে অবতার রূপে বধ করেছেন এক নারীকে‚ সেই অবতারেই তাঁকে আবির্ভূত হতে হবে | একবার নয় | বারবার অবতীর্ণ হতে হবে ধরাধামে | তার মধ্যে থাকবে মনুষ্য জন্মও | তাঁকেও ভোগ করতে হবে জীবনের দুঃখ কষ্ট |
ভৃগুর অভিশাপেই বিষ্ণুর দশাবতার | তবে সেখানেও তিনি নারী হন্তারক | রামচন্দ্র অবতারে বধ করেছেন তারকা রাক্ষসীকে | শ্রীকৃষ্ণ অবতারে হত্যা করেছেন পুতনাকে | অর্থাৎ অধর্মকে পরাস্ত করে ধর্ম সংস্থাপনার্থায় নারীও অবধ্য নয় |
চিরাচরিত ভাবে দেবতাদের আচার্য হয়ে থাকেন বৃহস্পতি | দৈত্যদের গুরু শুক্র | দুই পক্ষের বিরোধ পুরাণের ছত্রে ছত্রে |
মহর্ষি ভৃগু ছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মার মানসপুত্র | ঋক বৈদিক যুগে তিনি মনুর সমসাময়িক | মনুর সন্তান হল মানব | ভৃগুর সন্তানদের বলা হয় ভার্গব

বৈদিক জনপদ ব্রহ্মবর্তে দোশি পর্বতে বধূসার নদীর পাশে ছিল তাঁর আশ্রম | এখন এই অঞ্চল পরে রাজস্থান হরিয়ানা সীমান্তে | স্কন্ধ পুরাণ অনুযায়ী‚ ভৃগু পরে চলে যান ভৃগুকচ্ছে ( আজকের গুজরাতে‚ নর্মদা নদীর পাশে )‚ জায়গাটির নাম কালক্রমে হয়ে দাঁড়ায় ভারুচ |
ভৃগুর এক পত্নী হলেন দক্ষকন্যা খ্যাতি | তাঁদের দুই পুত্র হলেন ধাতা ও বিধাতা | কন্যার নাম ভার্গবী | যিনি আবার বিষ্ণুপত্নী | আর এক পত্নী কাব্যমাতার পুত্র হলেন শুক্র | যিনি আবার শুক্রাচার্য রূপে অসুরদের গুরু হন | ভৃগুর পত্নী পুলোমা জন্ম দেন ঋষি চ্যবনের | আবার ভৃগুর এক পুত্র হলেন জমদগ্নি | যিনি আবার পরশুরামের পিতা |
প্রসঙ্গত বিষ্ণু ব্যতীত ত্রিদেবের ব্রহ্মা ও মহেশ্বরকেও অভিশাপ দিয়েছিলেন ভৃগু | সে বিষয়ে পূর্বে উল্লেখ করেছি | আর একটি কথা জানিয়ে রাখা বাঞ্ছনীয় | এই পৌরাণিক কাহিনীগুলি সূত্র থেকে সূত্রান্তরে পরিবর্তিত হয় | পাঠকের যদি মনে হয় দেবতার বিপরীতে মনুষ্য-ঔদ্ধত্যের এই আখ্যান ভিত্তিহীন‚ তবে বলে রাখি এর উৎস মৎস্যপুরাণ | ২

ছোটকাল থেকে আমরা যে সপ্তর্ষীমন্ডলের কথা শুনে এসেছি, বা দেখেছি আগ্রহ ভরে আকাশের দিকে চেয়ে- সেই সপ্ত ঋষির একজন ছিলেন ভৃগু। হিন্দু পুরাণের নানা উৎসে সাত ঋষির নাম পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে | সাত ঋষি হলেন ভৃগু‚ অত্রি‚ অঙ্গীরা‚ বশিষ্ঠ‚ পুলস্থ্য‚ পুলহ ও ক্রতু |

পৃথিবীতে যতপ্রকার কঠিন ও দুর্বোধ্য শাস্ত্র রয়েছে জ্যোতিষশাস্ত্র তার মধ্যে অন্যতম একটি শাস্ত্র । সৃষ্টির রহস্য উদঘাটনের জন্য যত প্রকার শাস্ত্র পৃথিবীতে আছে তার মধ্যে জ্যোতিষ শাস্ত্র অন্যতম। অতীব আকর্ষনীয় ও বিষ্ময়কর শাস্ত্র। দর্শন কলা , বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার গবেষণায় মহামিলন ঘটেছে এই জ্যোতিষ শাস্ত্রে। বাস্তুশাস্ত্র এটিও জ্যোতিষ শাস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত । জ্যোতি এর সাথে ঈশ ধাতু যুক্ত হয়ে জ্যোতিষ হয়েছে। জ্যোতি মানে আলো তাহলে জ্যোতিষ মানে হয় জ্ঞানের আলো। যে প্রদীপের আলোক শিখা যত বেশি প্রসারিত থাকে সেই প্রদীপ তাতো দূর আলোকিত করতে পারে অর্থাৎ যত জ্ঞান ততই দূরদর্শিতা। তাই জ্যোতিষ কে বেদ এর চক্ষু ও বলা হয়েছে।
মনু স্মৃতি মতে,মহর্ষি ভৃগুই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি জ্যোতিষশাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন। এবং তাঁর সেই জ্ঞান তিনি লিপিবদ্ধ করেন ‘ভৃগু সংহিতা’য়। প্রথমে তিনি ৫ লাখেরও বেশি ভবিষ্যতবাণী লিপিবদ্ধ করেন বলে জানা যায়। এটা স্মর্তব্য যে মহর্ষি ভৃগু রচনা করেছেন জ্যোতিষ-সহ অন্যান্য শাস্ত্রের প্রামাণ্য আকর গ্রন্থ ভৃগুসংহিতা |
কয়েক জনমেও জ্যোতিষ শাস্ত্রের সব জ্ঞান জানা সম্ভবপর নহে । জন্ম জন্মান্তরের বিষয় এটি । চর্চাই জ্ঞানের ধারক ও বাহক । সংযম ও মহাসাধনা ছাড়া এক জনমে এই শাস্ত্র আয়ত্ব করা সম্ভব নয়।

২)ঋষি পরাশর

হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে, ঋষি বিশেষ। বেদের অনেক মন্ত্রের রচয়িতা। এঁর রচিত সংহিতা 'পরাশর-সংহিতা' নামে খ্যাত।

বশিষ্ঠ মুনির পুত্র শক্ত্রির ঔরসে ও অদৃশ্যন্তীর গর্ভে এঁর জন্ম হয়। বিশ্বামিত্রের সাথে দ্বন্দ্বের সূত্রে, বশিষ্ঠ তাঁর সকল পুত্র হারান। উল্লেখ্য, বিশ্বামিত্রের আদেশে কিংকর নামক এক রাক্ষসের আত্মা কল্মাষপাদের শরীরে প্রবেশ করে। এই রাক্ষস বশিষ্ঠের একশত পুত্রের সকলকেই হত্যা করে খেয়ে ফেলে। সকল পুত্র হারিয়ে বশিষ্ঠ আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর তিনি বিভিন্ন দেশে ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়ান। এইভাবে কিছুদিন কাটিয়ে ইনি দেশের দিকে রওনা দেন। চলার পথে পিছনে বেদ পাঠ শুনতে পেয়ে, পিছন ফিরে তাঁর পুত্রবধূকে (শক্ত্রির স্ত্রী) দেখতে পান। তিনি অবিলম্বে জানতে পারেন যে পুত্রবধূর গর্ভস্থ শিশু এই বেদমন্ত্র উচ্চারণ করছেন। এরপর তিনি খুশি মনে পুত্রবধূকে সাথে নিয়ে আশ্রমের পথে রওনা হন। পরে যথাসময়ে পুত্রবধুর সন্তান প্রসব করলে, তিনি এর নাম রাখেন পরাশর। বশিষ্ঠ নিজের জীবন 'পরাশু' অর্থাৎ বিসর্জন দিতে কৃতসংকল্প ছিলেন বলে এঁর নাম রাখা হয় পরাশর।

বড় হয়ে একদিন তিনি বশিষ্ঠকে পিতা বলে ডাকলে, অদৃশ্যদন্তী পরাশরকে তাঁর জন্ম বৃত্তান্ত ও পিতার পরিচয় দেন। পিতার মৃত্যুর কারণ রাক্ষস জেনে, তিনি রাক্ষসদের ধ্বংসের জন্য একটি রাক্ষস-সত্র যজ্ঞের আয়োজন করেন। উক্ত যজ্ঞে একে একে বিভিন্ন রাক্ষসরা ধ্বংস হতে থাকলে— অত্রি, পুলস্ত্য, ক্রতু ও অন্যান্য ঋষিরা রাক্ষসদের জীবন রক্ষার জন্য যজ্ঞস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা পরাশরকে বলেন যে, যেহেতু এই সকল রাক্ষসরা তোমার পিতার মৃত্যু সম্পর্কে কিছু জানেন না, সুতরাং সেই কারণে সকল রাক্ষস ধ্বংস করা অনুচিত। এরপর পরাশর এই যজ্ঞ সমাপ্ত করেন।

এর কিছুদিন পর পরাশর তীর্থ শেষ করে যমুনা তীরে আসেন। যমুনানদীতে খেয়া নৌকার ভিতর পরাশর মুনি সত্যবতীর (মৎস্যগন্ধা) সাথে মিলিত হলে, সত্যবতী গর্ভবতী হন। পরে যমুনা'র একটি দ্বীপে সত্যবতী একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এই সন্তানের গায়ের রঙ কালো এবং যমুনার দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন বলে এর নাম রাখা হয় কৃষ্ণ-দ্বৈপায়ন।ইনি তার লেখা প‍রাশর সংহিতা তে ভারতীয় জোতিষ শ্রস্ত্রকে সমাদৃত করেছেন।

৩)ঋষি কনাদ
বৈশেষিক দর্শনকার কণাদ ঋষি খ্ৰীঃ পূঃ ১২শ শতাব্দীতে বৰ্ত্তমান ছিলেন। তিনি তণ্ডুলকণা ভক্ষণ করিতেন বলিয়া তাঁহার নাম কণাদ হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়। তাঁহার প্রকৃত নাম উলুক বলিয়৷ তাঁহার প্রণীত দর্শন ‘ঔলুক্যদর্শন’ নামে খ্যাত। তিনি প্রভাসক্ষেত্রে বাস করিতেন এবং তাঁহার গুরুর নাম সোমশৰ্ম্মা ছিল। কনাদের মতে ভাব-পদার্থ—দ্রব্য, গুণ, কৰ্ম্ম, সামান্য, বিশেষ ও সমবায়—এই ছয়টী। তাঁহার মতে এই ষট্‌-পদার্থ সম্বন্ধে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করিতে পরিলেই মুক্তি লাভ হয়। কণাদ পরমাণু-বাদী ছিলেন। তাঁহার মতে—অদৃষ্ট কারণ বিশেষ দ্বারা পরমাণুর সংযোগ বিয়োগের দ্বারাই জগতের উৎপত্তি। তেজঃ ও আলো একই মূল পদার্থের বিভিন্ন অবস্থা মাত্র। ইহা তিনিই প্রথম আবিস্কার করেন। বর্ত্তমান সময়ে ইউরোপে পরমাণুবাদ সৰ্ব্বত্র গৃহীত। এই পরমাণুবাদ আমাদের দেশেই সৰ্ব্ব প্রথমে আবিষ্কৃত হইয়াছে। মহর্ষি কণাদই ইহার আবিষ্কৰ্ত্তা। মহর্ষি কণাদের জড়পদার্থের জ্ঞান সম্বন্ধে সমধিক দৃষ্টি ছিল। সেই জন্যই তিনি পরমাণুবাদ স্থাপন করেন। মেঘ, বিদ্যুৎ, বজ্রাঘাত, ভূমিকম্প, করকা, হিমশীলা, বৃক্ষের রস সঞ্চার, চুম্বক ও চুম্বকার্ষণ, গতি, জড়ের সংযোগ ও বিয়োগাদি গুণ ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ে তাঁহার চিন্তা ধারা ধাবিত হইয়াছিল। বড়ইদুঃখের বিষয় যে পরবর্ত্তীকালে আর কোনও পণ্ডিতের দৃষ্টি এইদিকে আকৃষ্ট হয় নাই। সুতরাং জড়বিজ্ঞানের উন্নতি ভারতবর্ষে আর হইল না। গ্ৰীসদেশীয় পণ্ডিত ডেমক্রিটাস ইউরোপে প্রথম পরমাণুবাদ আবিষ্কার করেন। তিনি কণাদের পরবর্তী।
(২) জৈনদর্শনাচার্য্য। তিনি জৈনমতে বৈশেষিকদর্শন প্রণয়ন করেন। তাঁহার গুরুর নাম রোহ গুপ্ত। তিনি খ্ৰীঃ পূঃ ৭১ অব্দে বৰ্ত্তমান ছিলেন।
(৩) কণাদ নামে এক জন জ্যোতিষ সংহিতার রচয়িত ও ছিলেন।
(৪) তিনি নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ পণ্ডিত বাসুদেব সাৰ্ব্বভৌমের অন্যতম ছাত্র। তিনি ‘অনুমান মণি ব্যাখ্যা’ গ্রন্থের রচয়িতা। খ্ৰীঃ চতুর্দ্দশ শতাব্দীর শেষভাগে তিনি বর্ত্তমান ছিলেন।

৪)বরাহমিহির:

বরাহমিহির প্রাচীন ভারতের গুপ্ত সাম্রাজ্যের সমসাময়িক (আনুমানিক ৫০৫ খ্রিস্টাব্দ - ৫৮৭ খ্রিস্টাব্দ) এক জন বিখ্যাত দার্শনিক, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও কবি। তিনি ‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’ নামের একটি মহাসংকলনগ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তাঁর জীবদ্দশার সময়কার গ্রিক, মিশরীয়, রোমান ও ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের সার লিপিবদ্ধ হয়েছে। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের সব চেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বিজ্ঞানীদের অন্যতম। জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও গণিতশাস্ত্র, পূর্তবিদ্যা, আবহবিদ্যা, এবং স্থাপত্যবিদ্যায় পণ্ডিত ছিলেন। তিনি কলা ও বিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত শাখায় ব্যাপক অবদান রাখেন। উদ্ভিদবিদ্যা থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান থেকে পুরাকৌশল --- জ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রেই ছিল তাঁর স্বচ্ছন্দ পদচারণা।

জীবন ও কর্ম
এই মনীষীর জন্ম ভারতের অবন্তিনগরে (বর্তমান উজ্জয়িনী)। গুপ্ত রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম হিসেবে তিনি স্বীকৃত। ভারতীয় পঞ্জিকার অন্যতম সংস্কারক ছিলেন তিনি। তিনিই বছর গণনার সময় বৈশাখকে প্রথম মাস হিসেবে ধরার প্রচলন করেন। আগে চৈত্র এবং বৈশাখকে বসন্ত ঋতুর অন্তর্গত ধরা হতো। পৃথিবীর আকার এবং আকৃতি সম্বন্ধে তার সঠিক ধারণা ছিল। তার জন্ম ৫৮৭ খ্রিস্টাব্দ ধরা হলেও কারও কারও মতে তা ৫৭৮খ্রিস্টাব্দ।

বরাহমিহির ছিলেন শক জাতিভুক্ত। সে সময় আফগানিস্তান, পঞ্জাব, সিন্ধু ও রাজপুতানা (বর্তমান রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ) নিয়ে গঠিত এক বিরাট এলাকা জুড়ে শকস্তান নামের এক রাজ্য অবস্থিত ছিল। শকরা ছিল মূলত পূর্ব ইরান থেকে আগত একটি গোত্র। মিহির নামটি ফার্সি "মিথ্‌রা" শব্দ থেকে এসেছে। ভারতের প্রাচীন মথুরা রাজ্যের নামও এই ফার্সি শব্দটি থেকে এসেছে।

বরাহমিহির তাঁর রচিত ‘বৃহজ্জাতক’ গ্রন্থে বলেছেন, তিনি আদিত্যদাসের সন্তান, তিনি তাঁর পিতার কাছ থেকে শিক্ষালাভ করেছিলেন কাপিত্থক নামক স্থানে এবং অবন্তি নামক স্থানে বসবাস করার সময় তিনি এই (বৃহজ্জাতক) গ্রন্থটি রচনা করেন।

গ্রন্থাবলি
বরাহমিহির তিনটি বিষয়ের উপর গ্রন্থ রচনা করেন, যথা - তন্ত্র বা গাণিতিক জ্যোতির্বিদ্যা, হোরা (জাতক) বা কুন্ডলী এবং সংহিতা বা সাধারণ জ্যোতিষবিদ্যা। বরাহমিহির তিনটি প্রধান গ্রন্থ রচনা করেন: ‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’, ‘বৃহৎসংহিতা’ ও ‘বৃহজ্জাতক’। এ ছাড়াও তিনি আরও ৫টি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।

জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষবিদ্যায় অবদান
বরাহমিহিরকে আধুনিক ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তাঁর আগে ভারতবর্ষের জ্যোতিবির্জ্ঞানের মূল গ্রন্থ ছিল ‘বেদাঙ্গ জ্যোতিষ’, যা খ্রিস্টপূর্ব ১৪শ শতকে রচিত হয়েছিল। এটি অনুসারে ৬৭টি চান্দ্র মাস নিয়ে গঠিত পাঁচ বছরে একটি যুগ হয় এবং এটিতে রাহু ও কেতু নামের দুইটি ধারণা দিয়ে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। ‘বেদাঙ্গ জ্যোতিষ’ প্রায় ১৫০০ বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রধান আকরগ্রন্থ ছিল। কিন্তু বরাহমিহির তাঁর ‘সূর্যসিদ্ধান্ত’ নামক রচনাতে যে সূর্যকেন্দ্রিক ব্যবস্থার কথা বর্ণনা করেন, তা ছিল অনেক বেশি সঠিক। ফলে এর পর থেকে ভারতে তাঁর বর্ণিত ব্যবস্থাটিই প্রচলিত হয়ে যায়।

পশ্চিমা জ্যোতির্বিজ্ঞানে বরাহমিহিরের জ্ঞান ছিল অনুপুঙ্খ। তার মহাগ্রন্থ ‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’য় তিনি প্রথমে ভারতীয় স্থানীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ধারাগুলির বর্ণনা দেন এবং শেষের দুইটি খণ্ডে পশ্চিমা জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করেন। এগুলিতে গ্রিক ও আলেকজান্দ্রীয় ঘরানার গণনা, এমনকী টলেমীয় গাণিতিক সারণি ও ছকের পূর্ণাঙ্গ রূপ স্থান পেয়েছে।

গণিতশাস্ত্রে অবদান
বরাহমিহির গণিতের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র আবিষ্কার করেন।

তিনি ১ম আর্যভট্টের প্রদত্ত সাইন সারণিগুলির উন্নতি সাধন করেন; তাঁর দেওয়া মানগুলি ছিল অধিকতর নিখুঁত। এর ফলে ভারতীয় জ্যোতির্বিদেরা আরও নিখুঁতভাবে গণনা করার সুযোগ পান। বরাহমিহির ‘এন’ সংখ্যক বস্তু থেকে ‘আর’ সংখ্যক বস্তু পছন্দ করার সমস্যা তথা ‘সমাবেশ’-এর সমস্যাটিকে ভিন্ন ভাবে সমাধান করার প্রয়াস নেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি এক ধরনের সারণি নির্মাণ করেন। এই সারণিটিই বহু শতাব্দী পরে ইউরোপে ‘পাস্কালের ত্রিভুজ’ নাম নিয়ে পুনরাবিষ্কৃত।ইনি ত্রিকোনমৃতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র জানিয়েছেন

৫)আর্যভট্ট:

জ্যোতির্বিদ্যায় আর্যভট্টের অবদান
আর্যভট্ট (৪৭৬ খ্রিস্টাব্দ – ৫৫০ খ্রিস্টাব্দ) প্রাচীন ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত গণিতবিদদের মধ্যে এক জন। তাঁর নামে ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম ‘আর্যভট্ট’ রাখা হয়।

জন্ম
আর্যভট্টের কাজ থেকে তাঁর জন্মসাল সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া গেলেও তাঁর জন্মস্থান নিয়ে সুবিশেষ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। আর্যভট্টের অন্যতম ভাষ্যকার প্রথম ভাস্করের ভাষ্য অনুযায়ী তাঁর জন্ম হয়েছিল অশ্মকা নামের একটি জায়গায়। প্রাচীন বৌদ্ধ এবং হিন্দু রীতিতে এই জায়গাটিকে নর্মদা এবং গোদাবরী নদীর মধ্যবর্তী স্থানে দক্ষিণ গুজরাত এবং উত্তর মহারাষ্ট্রের আশেপাশের একটি জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

উচ্চশিক্ষা
কিছু তথ্যমতে জানা যায় যে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কুসুমপুরায় গিয়েছিলেন। তিনি কুসুমপুরায়ই বসবাস করতেন। তাঁর ভাষ্যকার প্রথম ভাস্কর এই স্থানকে পাটলিপুত্র নগরী অভিহিত করেছেন। তিনি কুসুমপুরের আর্যভ নামে খ্যাত ছিলেন। তাঁর কাজের অধিকাংশই তিনি করেছিলেন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানেই তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। শিক্ষাশেষে তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। কেউ কেউ বলেছেন, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবেও আর্যভট্ট দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

প্রধান অবদান
প্রাচীন ভারতীয় গণিতের ইতিহাসে আর্যভট্টের হাত ধরেই ক্লাসিকাল যুগ (কিংবা স্বর্ণযুগ) শুরু হয়। গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত আর্যভট্টের বিভিন্ন কাজ মূলত দু’টি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ‘আর্যভট্টীয়’ একটি, যেটি উদ্ধার করা গিয়েছে। এটি রচিত চার খণ্ডে, মোট ১১৮টি স্তোত্রে। অন্য যে কাজটি সম্পর্কে জানা যায় সেটি হল ‘আর্য-সিদ্ধান্ত’। ‘আর্য-সিদ্ধান্তের’ কোনও পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে বরাহমিহির, ব্রহ্মগুপ্ত এবং প্রথম ভাস্করের কাজে এটির উল্লেখ মেলে। আর্যভট্ট গ্রন্থ রচনা করেছেন পদবাচ্যের আকারে।

আর্যভট্টীয়
মাত্র ২৩ বছর বয়সে আর্যভট্ট এই গ্রন্থটি সংকলন করেন। এ চারটি অধ্যায়‌ দশগীতিকা, গণিতপাদ, কালক্রিয়াপদ ও গোলপাদ। দশগীতিকা, কালক্রিয়া ও গোলপাদ অধ্যায়ে গোলীয় ত্রিকোণমিতি ও জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত বিষয়াবলি রয়েছে। অন্য দিকে গণিতপাদে আছে পাটীগণিত, বীজগণিত, সমতল ত্রিকোণমিতি, দ্বিঘাত সমীকরণ, প্রথম ‘এন’ সংখ্যক স্বাভাবিক সংখ্যার ঘাতবিশিষ্ট পদ সমূহের বর্গ ও ঘনের সমষ্টি এবং একটি সাইন অনুপাতের সারণি রয়েছ। তা ছাড়া এই অধ্যায়ে সে সময়কার জনপ্রিয় জ্যোতিষচর্চার প্রয়োজনীয় ৩৩টি গাণিতিক প্রক্রিয়ার বর্ণনা রয়েছে। গণিতপাদে আর্যভট্ট পাই-এর মান তথা বৃত্তের পরিধির সঙ্গে এর ব্যাসের মান ৩.১৪১৬ হিসাবে চিহ্নিত করেন।

জ্যোতির্বিদ্যায় আর্যভট্টের অবদান
আর্যভট্টীয় বইটির গোলপাদ অংশে আর্যভট্ট উদাহরণের মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন যে পৃথিবী নিজ অক্ষের সাপেক্ষে ঘোরে। তিনি পৃথিবীর আক্ষিক গতির হিসাবও করেছিলেন। তাঁর হিসেবে পৃথিবীর পরিধি ছিল ৩৯,৯৬৮ কিলোমিটার, যেটা সে সময় পর্যন্ত বের করা যে কোনও পরিমাপের চেয়ে শুদ্ধতর (ভুল মাত্র ০.২%)। আর্যভট্ট সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের হিন্দু পৌরাণিক ধারণার পরিবর্তে প্রকৃত কারণগুলো ব্যাখ্যা করে গেছেন। সেই সঙ্গে তিনি সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণের সময়কাল নির্ণয়ের পদ্ধতিও বের করেছিলেন। আর্যভট্ট বলেছিলেন যে চাঁদের আলো আসলে সূর্যের আলোর প্রতিফলনেরই ফলাফল।১ থেকে ৯ এই সংখ্যা গুলি তিনি ই চিনিয়েছেন 0 তার অন্যতম আবিষ্কার।

৬)জোতিরবিদ লীলাবতী

• লীলাবতী (প্রাচীন বিজ্ঞানী / আচার্য ভাস্করের কন্যা)
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

লীলাবতী ছিলেন বিখ্যাত প্রাচীন ভারতীয় গনিত বিদ আচার্য ভাস্করের কন্যা।
লীলাবতী নামের মহাকাব্যটির রচয়িতা মেয়েটির পিতা এই উপমহাদেশেরই প্রাচীন উজ্জ্বয়নী মানমন্দিরের প্রধান আচার্য ভাস্কর (Bhaskara Acharya), যিনি বরাহমিহির (Varahmihira) ও ব্রহ্মগুপ্তের (Brahmagupta) গণিতের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যান বহুদূর এবং যাঁকে বলা হয় দ্বাদশ শতকের গণিত ও মহাকাশ বিজ্ঞানের শীর্ষবিন্দু। ক্যালকুলাস, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংখ্যাতত্ত্ব এবং সমীকরণ সমাধানে তাঁর জ্ঞানের সমকক্ষতা অর্জন করতে পৃ্থিবীতে কেটে যাবে আরও কয়েকশ বছর। এবং পৃ্থিবীর মানুষ বিস্ময়ে জানবে উইলিয়াম ব্রাউংকার, পিয়েরে দ্য ফামা (Pierre de Fermat), লিউনার্দো অয়লার (Leonhard Paul Euler) ও রলি’র মত মহান গণিতজ্ঞদের অনেক অবদান আসলে একেবারে নতুন কিছু নয়, বহু পূর্বেই পৃ্থিবীকে তা দিয়ে গিয়েছেন আচার্য ভাস্কর।

লীলাবতী ছিলেন অসামান্য ধীমতী এক মহিলা। তার জন্ম খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে। প্রাচীন ভারতের অদ্বিতীয় জ্যোতির্বিদ ভাস্করাচার্য একমাত্র কন্যা লীলাবতীর ভাগ্যগণনায় জেনেছিলেন যে, তার অকাল বৈধব্য ঘটবে। আর সে কারণেই তিনি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে লীলাবতীর বিয়ের শুভক্ষণ স্থির করেছিলেন। কিন্তু লীলাবতীর অসাবধানতায় তার পিতার কাল নির্ণয়ে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটেছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বিয়ের কিছুদিন পরই লীলাবতীর স্বামী মারা যান। অকাল বৈধব্য ঘটায় আচার্য ভাস্কর লীলাবতীকে নিজের কাছে নিয়ে এসেছিলেন। গনিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের অসামান্য এই পণ্ডিত কন্যাকে গনিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান শিখিয়েছিলেন।

তার উদ্দেশ্যও সফল হলো। 'সিদ্ধান্তশিরোমণি' নামে ভাস্করাচার্য যে বিখ্যাত গ্রন্থটি রচনা করেন, তার তৃতীয় খণ্ডটি রচনা করেছিলেন লীলাবতী নিজে। আর এজন্য ভাস্করাচার্য গ্রন্থটির নাম দেন 'লীলাবতী'। পাটিগণিত ও বীজগণিতের এই সূত্রগুলো আজও লীলাবতীর নামেই পরিচিত।

এই প্রাচীন প্রাজ্ঞ নারীকে জানাই প্রণাম।
____________________________

বিজ্ঞান বিশ্বে সভ্যতার আদি হতে অবদান রেখে চলেছে বৈদিক দার্শনিক ও বিজ্ঞানী গন।যখন ইউরোপে ভালভাবে কাপড় বোনার প্রযুক্তিও ভালভাবে রপ্ত হয়নি তখন প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানীরা পাই এর মান বের করেছেন,পৃথিবী সূর্যের দূরত্ব বের করেছেন, ত্রিকোণমিতির সুত্র বের করেছেন,ক্যালকুলাসের মৌলিক বিষয় নিয়ে চর্চা করেছেন,জ্যামিতির সুত্রপাত করেছেন,জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করেছেন।কিন্তু যখনই ভারত বিদেশি শাসনের অন্তরালে বন্দী হয়েছে তখন থেকেই শুরু হয়েছে অন্ধকার যুগের যার রেশ এখনও বয়ে চলেছে এই ভারতীয় উপমহাদেশ।
এছাড়া আরও অনেক দিকপাল আছে যারা জোতিষ শ্রাস্ত্র কে সমাদৃত করেছেন, তাদের কথা আর একদিন বলবো।

আপনি কি জানতে চান আপনার ভাগ্য ??
আপনার সুযোগ গুলি কি কি জানতে চান ??
আগামি বিপদ থেকে সবধান হতে চান ??

তাহলে এখুনি আপনার জন্ম তারিখ , জন্ম সময় , জন্ম স্থান এই website www.apnc co.in তে গিয়ে ১০০০টাকা দিয়ে registration করুন আপনা কে সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানানো হবে ..ও কুন্ডলী ও প্রতিকার প ঠানো হবে।

ACHARYA KUSH MUKHERJEE
RAMPURHAT CHAKLAMATH BIRBHUM (W.B)
PIN NO 731224
GOLD MEDALIST
WHATSAPP NO 9233172388
CONTACT NO 7001608953
ONLINE PORISEVA DEWA HOI rs 1000/=
MY PAGE NAME IS ASTRO-PALMIST-NEUMEROLOGY CENTER
PLEASE LIKE&SARE
Contact with me :www.apnc.co.in
https://m.facebook.com/Astro-Palmist-Neumerology-Center-1569956439973629/?ref=bookmarks



Blog Url:
https://apnc.co.in/blog.php?blog=20190926075423