সূপ্রভাত
মহামৃত্যূনজ্ঞয় যোজ্ঞ ও মহামারি
আমি গতকাল সমস্ত দেশবাসীর মঙ্গলের জন্য নিজ বাড়িতে লকডাইন মেনে ,শুধুমাত্র একজন পৌড়হিত্য নিয়ে মহামৃত্যূনজ্ঞয় যোজ্ঞ করি।
যজ্ঞ কেনো করা হয়?
যজ্ঞ হচ্ছে মহৎ উদ্দেশ্যে সাধিত শুভ কর্ম।যা মহামারির সঠিক উপাচার।তবে লকডাইন মেনে ও কোনো জনসমাগম ছাড়া।
যজ্ঞের দর্শন আমাদের শেখায় সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠাকে
এবং তুলে ধরে এমন জীবন ব্যবস্থাকে যেখানে
মানবীয় গুণাবলীকে রক্ষা ও এর আদর্শ সমাজে প্রচারিত
করা হয়। এরকম কিছু যজ্ঞ হচ্ছে সেবা যজ্ঞ- যেখানে
সমাজ সেবাই সকলের ব্রত, জ্ঞান যজ্ঞ- মানবসমাজে
জ্ঞানের আলোকবর্তিকা প্রজ্বলনের ব্রত, প্রাণ যজ্ঞ-
যেখানে জীবের প্রাণ রক্ষাই আমাদের ব্রত।
সত্যি করে বলতে আমরা জেনে না জেনে অনেক
যজ্ঞই করছি মনের অগোচরে।
সাধারণত যজ্ঞ বলতে আমরা বুঝি একটি কুণ্ডে আগুন
জ্বালিয়ে মন্ত্র পাঠ করে বিভিন্ন প্রকার দ্রব্য আহুতি দেয়া।
বৈদিক ধর্মে এমনি নিত্য আচরিত একটি যজ্ঞ হচ্ছে হবন বা
অগ্নিহোত্র।অনেক বস্তুবাদীই প্রশ্ন করতে পারেন
অগ্নিহোত্র কি অর্থহীন আড়ম্বর নয়? মোটেও নয়, বরং
এর মাঝে লুকিয়ে আছে বিজ্ঞানের অন্যতম বিস্ময়।
আমাদের এ জগতে শক্তির মধ্যে তাপ শক্তি ও শব্দ শক্তি
অন্যতম। যজ্ঞে এই দুই শক্তিরই সম্মেলনে আমরা অর্জন
করতে পারি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উপকারিতা। যজ্ঞে
বিভিন্ন পদার্থের দহন ঐ বস্তুর অন্তর্নিহিত সঞ্চিত শক্তির
উন্মোচন ও পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়ার একটি উৎকৃষ্ট
প্রক্রিয়া। অন্যদিকে যজ্ঞে উচ্চারিত মন্ত্রের কম্পাঙ্ক
শক্তি বহন করে এক আধ্যাত্মিক প্রেরণা।
যজ্ঞে সমিধ হিসেবে যেসব দ্রব্য ব্যবহার করা হয় তার
মধ্যে থাকে নানা সুগন্ধি পদার্থ, ওষধি বৃক্ষের কাঠ, পুষ্টিকর
খাদ্য ইত্যাদি। আপনাদের মনে হতে পারে এসব দ্রব্য
পোড়ানোর ফলে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড, বিষাক্ত
কার্বন মনো অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড প্রভৃতি উৎপন্ন
হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বৈদিক কল্প ও ব্রাহ্মণ গ্রন্থের
বিধি মোতাবেক সঠিক অনুপাতে জ্বালানী, দাহ্য পদার্থ
ব্যবহার করেন এবং যজ্ঞকুণ্ড যদি শাস্ত্রীয় রীতি অনুসারে
তৈরী করেন তবে কোনো বিষাক্ত গ্যাসই উৎপন্ন হবে
না।
যে কার্বন ডাই অক্সাইড যজ্ঞকুণ্ডে উৎপন্ন হবে তা
যজ্ঞকুণ্ডের প্রবল উত্তাপে বাষ্পের সঙ্গে ক্রিয়া করে
ফরমালডিহাইড উৎপন্ন করবে যা যজ্ঞকুণ্ডের চারপাশের
পরিবেশ সুগন্ধে পূর্ণ করে তুলবে। আর এই গ্যাস কেবল
সুগন্ধিই নয়, বায়ুতে থাকা বিভিন্ন কীটাণু দমনেও গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ যজ্ঞের মাধ্যমে আপনি পাবেন দুর্গন্ধ
মুক্ত স্বাস্থ্যকর এক পরিবেশ।
আর যে অল্প পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে যাবে
সেটি সালোকসংশ্লেষণ ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকৃতিতে বিলীন
হয়ে যাবে। যা একই সাথে বৃক্ষরাজির খাদ্য ও পরিবেশে
মুক্ত অক্সিজেনের যোগান দেবে। তাই যজ্ঞ কেবল
যজ্ঞকারীর নয়, বরং সমগ্র পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য
আশীর্বাদ স্বরূপ।
অনেকে বলতে পারেন যজ্ঞে ব্যবহৃত কাঠের জন্য
তো প্রচুর বৃক্ষ নিধন করতে হবে। আপনাদের জন্য বলছি
বৈদিক ঋষিগণ কেবল মৃত বৃক্ষের কর্তনেরই নির্দেশ
দিয়েছেন। আর সেই সাথে মনু আদি মহর্ষিরা ব্যাপকভাবে
বৃক্ষরোপনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। তাই যজ্ঞের জন্য
কোনো জীবিত বৃক্ষ কর্তনের প্রয়োজন নেই, বরং
মৃত বা মৃতপ্রায় বৃক্ষের কাঠই যজ্ঞে সমিধারূপে ব্যবহৃত
হবে।
বর্তমান পরিবেশ দূষণ ও রোগ মহামারীর যুগে যজ্ঞের
আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ড. হাফকিন বলেছেন, “ঘি এবং
চিনি মিশ্রণ করে যজ্ঞে পোড়ালে যে ধোঁয়া উৎপন্ন হয়
তা বিভিন্ন রোগজীবাণু ধ্বংস করে।” প্রফেসর টিলওয়ার্ড
বলেন, “চিনি মিশ্রিত হবিষ্যের পরিবেশ শোধনের শক্তি
রয়েছে। এটি যক্ষ্মা, মিলস, বসন্ত প্রভৃতি জীবাণুনাশক।”
গায়ত্রী পরিবার আয়োজিত গোরখপুরে অশ্বমেধ যজ্ঞ
চলাকালীন সময়ে “উত্তর প্রদেশ দূষণ রক্ষা বোর্ড” এর
ডিরেক্টর ড. মনোজ গর্গ একদল বিজ্ঞানী নিয়ে
বেশকিছু পরীক্ষা চালান। এই পরীক্ষার ফল “অখণ্ড
জ্যোতি” সাময়ীকির সেপ্টেম্বর ’৯৭ সংখ্যাতে প্রকাশ
পায়।
যা যজ্ঞের ব্যাপক উপযোগিতা ফুটিয়ে তুলে। বিজ্ঞানীরা
দেখতে পান যজ্ঞ সম্পাদনের পূর্বে সে স্থানে বিষাক্ত
সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ ছিল
যথাক্রমে ৩.৩৬ ও ১.১৬ ইউনিট এবং যজ্ঞ সম্পাদনের
শেষে বিষাক্ত গ্যাস দুটির পরিমাণ কমে দাড়ায় যথাক্রমে ০.৮০
ও ১.০২ ইউনিট।
বিজ্ঞানীর দল যজ্ঞকুণ্ডের কিছু দূরে অবস্থিত জলাশয়ের
পানি পরীক্ষা করেও অভূতপূর্ব ফল লাভ করেন। তাঁরা
দেখতে পান সংগৃহীত নমুনায় যজ্ঞের পূর্বে ব্যাকটেরিয়া
ছিল ৪৫০০ এবং যজ্ঞের শেষে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কমে
দাড়ায় ১২৫০।
যজ্ঞাবশিষ্ট যে ছাই ছিল তাতে মিনারেল পদার্থের পরিমাণ
পরীক্ষা করে উত্তর প্রদেশ কৃষির ডেপুটি ডিরেক্টর
একে উত্তর মৃত্তিকা উর্বরকারক বলে মত দেন।
১৯৯৩-১৯৯৫ পর্যন্ত ২৭টি যজ্ঞভিত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়,
যার প্রত্যেকটিই বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে যজ্ঞের
উপযোগিতা ব্যাপকহারে সমর্থন করে।
আপনারা অনেকেই ভূপাল ট্র্যাজেডির কথা শুনেছেন,
যেখানে বিষাক্ত এমআইসি গ্যাস নির্গমনের ফলে শতশত
মানুষ মারা যায় এবং সহস্র মানুষ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত
হয়। এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল মাইলের পর মাইল।
৪মে ১৯৮৫ এর দৈনিক “দ্যা হিন্দি” এর একটি প্রতিবেদন
সকলকে বিস্ময়ে হতবাক করে দেয়। প্রতিবেদনের
শিরোনাম ছিল “দূষণ প্রতিরোধে বৈদিক উপায়।” যেখানে বলা
হয় ওই গ্যাস প্ল্যান্টের খুব নিকটবর্তী সোহান লাল খুশওয়া
এর পরিবারের কোনো সদস্যই ওই ঘটনার ফলে মৃত্যু
তো দূরে থাক অসুস্থই হয় নি। কারণ কি? অগ্নিহোত্র। হ্যাঁ
একমাত্র এই পরিবারটিই সেখানে নিয়মিত বৈদিক অগ্নিহোত্র
যজ্ঞ করত। যার ফল স্বরূপ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবল থেকে
রক্ষা পায় পরিবারটি। আর এই ঘটনা পরিবেশ দূষণ রোধে
অগ্নিহোত্র যজ্ঞের কার্যকারিতা পুনরায় প্রতিপাদন করল।
তাই তো বৈদিক ধর্ম ঘোষণা দিয়েছে “য়জ্ঞো বৈ
শ্রেষ্ঠতম কর্মম্”।
ভগবানও বলেছেন যজ্ঞের মাধ্যমে মনীষিরা কেবল
নিজের চিত্ত শুদ্ধিই ঘটায় না, সেই সাথে ভূত অর্থাৎ
পরিবেশের শুদ্ধতাও বজায় রাখে। আর কলির এ দুঃসময়ে
আমরা যজ্ঞবিমুখী হয়ে কেবল অন্ধকারেই ঘুরে
বেড়াচ্ছি। তাই আমাদের উচিত পুনরায় অগ্নিহোত্র আদি যজ্ঞ
আয়োজনের মাধ্যমে সনাতনের স্বর্ণযুগে ফিরে যাওয়া।
যেদিন ঘরে ঘরে সুবাসিত অগ্নিহোত্রের গন্ধ ছেয়ে
যাবে এবং মুখে মুখে গায়ত্রীর পবিত্র ধ্বনি ও মহামৃত্যূজ্ঞয় মন্ত্রে।
, শিব হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-লয়রূপ তিন কারনের কারন, পরমেশ্বর- এটা তার প্রণাম মন্ত্রেই বার বার উঠে এসেছে। তিনি জন্মরহিত, শাশ্বত, সর্বকারণের কারণ; তিনি স্ব-স্বরূপে বর্তমান, সমস্ত জ্যোতির জ্যোতি; তিনি তুরীয়, অন্ধকারের অতীত, আদি ও অন্তবিকাশিত।
।
ভগবান শিব কে মহাকাল বলা হয় কেন ?
প্রলয়কর্তা অর্থে ঈশ্বরের নাম শিব। কিছুকাল না গেলে কোনো বস্তুর ধ্বংস অসম্ভব। তাই শিবকে কাল ও মহাকালও বলা হয়। যিনি সব কিছুর ধ্বংসকর্তা তাঁর আবার ধ্বংস কী? সুতরাং শিবের একটি বিশেষ নাম মৃত্যুঞ্জয়। বিশ্বকে ঈশ্বরের শরীর বলা হয়েছে। শিবোপাসক গণ মনে করেন ও সাধারণতও এই বিশ্বাস প্রবল দেখা যায় যে, মহাদেবের ললাটে ও মানুষের চোখের মতো তিনটি চোখ আছে। বাস্তবিক তা নয়। সূর্য, চাঁদ ও আগুনই মহাদেবের তিন চোখ, তাই তিনি ত্রিলোচন। যথা, শঙ্করাচার্য-কৃত অপবাদভঞ্জন স্তোত্রে “বন্দে সূর্যশশাঙ্ক বহ্নিনয়নং” ইত্যাদি। তিন চোখ তিন রকমের বলে মহাদেবের এক নাম বিরুপাক্ষ। জীর্ণদশায় প্রলয় ঘটে ও কালের বয়স অপরিমেয় বলে মহাদেবের মূর্তি বুড়ো মানুষের শরীরের মতো কল্পিত হয়েছে, তাঁকে প্রায় সর্বদা বৃদ্ধ বলে বর্ণনা কর হয়। চিতাভস্ম, শ্মশান ও নরমুণ্ড প্রভৃতি ধ্বংস বা মৃত্যুর স্মারক বলে ওই সবের দ্বারা তাঁকে দেখা হয়েছে। ধ্বংসকর্তা স্বয়ং মৃত্যুঞ্জয়, সুতরাং তাঁর মৃত্যুঞ্জয়ত্ব দেখানোর জন্য তিনি বিষধর সর্পজড়িত বলে বর্ণিত। মহাদেবরূপী কাল ও জড়জগৎরূপী প্রকৃতি সংযোগেই সব কিছুর উৎপত্তি হয়, সুতরাং মহাদেব ও দুর্গাকে জগতের পিতা ও মাতা বলা হয়েছে। কালিদাস বলেছেন “জগতঃ পিতরৌ বন্দে পার্বতী পরমেশ্বরৌ।” এই জন্য শিবলিঙ্গ ও গৌরীপট্টেরও কল্পনা। শবশিবারূঢ়া কালীমূর্তি, শক্তিহীন হলে শিবের যে অবস্থা ঘটে তা দেখানোর জন্য কল্পিত হয়েছে। কালী মহাদেবের শক্তি, সুতরাং শিবের দেহ থেকে শক্তি পৃথক হয়ে বেরিয়ে এলে শিব শক্তিহীন হয়ে শবের মতো পড়ে থাকেন। শঙ্করাচার্য আনন্দলহরীতে বলেছেন, “শিবঃ-শক্ত্যা-যুক্তো ভবতি শক্তঃ প্রভবিতুং। নচদেবং দেবোনখলু কুশলঃ স্পন্দিতুমপি।” অর্থাৎ, শিবের প্রভাব শক্তিযুক্ত থাকলেই; নয়তো তাঁহার নড়াচড়ার শক্তিও থাকে না। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের প্রকৃতি খণ্ডেও ওই কথা আছে। “শিবশক্তস্তয়া শক্ত্যাশবাকার স্তয়া বিনা।” অর্থাৎ, শিব শক্তিসহ থাকলেই শক্তিমান, নচেৎ শবাকার হন। মহাদেবকে বৃষবাহন বলার তাৎপর্য্য এই যে, কালের গতি বৃষভের গতির মতো ধীর অথচ নিশ্চিত। মেঘই মহাদেবের জটাজুট, সুতরাং শিবজটা থেকে গঙ্গার নির্গম হয় এর অর্থ এই যে, মেঘ থেকে জল নির্গত হয়। মহাদেবকে ভোলামহেশ্বর ও ধুস্তরফলাদি ভক্ষণকারী বলার তাৎপর্য এই যে, কালকে অনেক সময় মদবিহ্বল ব্যক্তির মতো কাজ করতে দেখা যায়। যেমন দুর্যোধনের রাজ্যভোগ ও যুধিষ্ঠিরের বনবাস প্রভৃতি। মহাদেব বৃদ্ধ কিন্তু উমা নিত্যযৌবনা, এর তাৎপর্য এই যে সময় একবার গেলে আর ফেরে না এবং তার বয়সেরও অন্ত নেই। কিন্তু পৃথিবী প্রতি বছর অভিনব বেশ ধারণ করে ও একবার বসন্ত শেষ হলেও তা বার বার আসতে থাকে।
কাল শূন্যের অনুরূপ ও আচ্ছাদনবিহীন বলে তাকে শ্বেতকায় ও দিগম্বর বলা হয়েছে। মহাদেবকে আদিদেব বলার তাৎপর্য এই যে, সবার আগেও কাল বিদ্যমান ছিল। সবই কালে ঘটছে। সুতরাং মহাদেব সর্বজ্ঞ, কালেই জ্ঞানলাভ হয়, সুতরাং তিনি জ্ঞানদাতা, এবং যশস্বী মহাত্মাদের কাল বাঁচিয়ে রাখে, সুতরাং তিনি ভক্তমুণ্ডমালী। মহাভারতে সুরথ সুধন্বার মুণ্ডগ্রহণ করার জন্য মহাদেবের যে আগ্রহ বর্ণিত হয়েছে, তাতে তাঁকে ভক্তমুণ্ডমালী শব্দের বাচ্য করে তুলেছে বলতে হবে।
অনন্ত বা শূন্যের বলরামরূপ কল্পনা করে কালের কল্পিতরূপ মহাদেবের সদৃশ করা হয়েছে। একটি মনোহরশায়ী গানেও বলা হয়েছে, “তার পর একজন বৃষভেতে আরোহণ, দাদা বলাইর মতন।” বাস্তবিক বলরাম ও মহাদেবের রূপে বিলক্ষণ সাদৃশ্য আছে। অনন্ত কাল অনন্ত আকাশের সদৃশ্যই বটে। শাস্ত্রে অনেক জায়গায় শিব ও দুর্গাকে পুরুষ ও প্রকৃতিও বলা হয়েছে।
রুদ্রের আট রকম শরীরের বর্ণনাও আছে।
যথা— সূর্য,
জল,
পৃথিবী,
অগ্নি,
আকাশ,
বায়ু,
দীক্ষিত ব্রাহ্মণ ও চন্দ্র।
মহামারির মহামন্ত্র মহামৃত্যূজ্ঞয় মন্ত্র
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র একটি সর্বরোগ হরণকারী মন্ত্র । এই মন্ত্রটি ভগবান মহাদেবকে স্মরণ করে রচিত । এই মন্ত্রটি ঋগ্বেদেও দৃষ্ট হয় - আবার এই মন্ত্রটি মার্কণ্ডেয় পুরাণেও দৃষ্ট হয় । এই মন্ত্রটি জপ করলে মানুষ সব অশান্তি , রোগপীড়া , ব্যাধি থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হয় । নিরাকার মহাদেবই মৃত্যুমুখী প্রাণকে বলপূর্বক জীবদেহে পুণঃ প্রতিষ্ঠিত করেন এবং অপার শান্তিদান করেন । এই মন্ত্রটির সাথে একটি কাহিণী প্রচলিত আছে । সেটি হল - মহর্ষি মৃকন্ডু এবং তাঁর পত্নী মরুদবতী পুত্রহীণ ছিলেন । তারা তপস্যা করেন মহাদেবকে সন্তুষ্ট করেন এবং এক পুত্র লাভ করেন , যার নাম হল মার্কন্ডেয় । কিন্তু মার্কন্ডেয়র বাল্যকালেই মৃত্যুযোগ ছিল । অভিজ্ঞ ঋষিদের কথায় বালক মার্কন্ডেয় শিব লিঙ্গের সামনে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করতে লাগলেন । যথা সময়ে যম রাজ এলেন । কিন্তু মহাদেবের শরণে আসা প্রাণকে কেইবা হরণ করতে পারে ! যমরাজ পরাজিত হয়ে ফিরে গেলেন এবং মার্কন্ডেয় মহাদেবের বরে দীর্ঘায়ু লাভ করলেন । পরে তিনি মার্কন্ডেয় পুরাণ রচনা করলেন ।
মার্কন্ডেয় ঋষি মহাদেবের স্তুতি করলেন মহামৃত্যুঞ্জয় স্তোত্রের মাধ্যমে যেটি মার্কন্ডেয় পুরাণে পাওয়া যায় ।
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র:
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের প্রথম উল্লেখ
পাওয়া যায় ঋগ্বেদে। তার পর যজুর্বেদ
এবং অথর্ব বেদও নিজেদের শ্লোকে
অন্তর্ভুক্ত করেছে এই মন্ত্রকে। এই
অন্তর্ভুক্তি কি আখেরে মন্ত্রের
জনপ্রিয়তার ফল?
না কি বহুল পাঠের কারণে চারটি বেদের
মধ্যে তিনটিই গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র? এমনই তার মাহাত্ম্য?
শ্লোকের দিকে তাকালেই এই মন্ত্রের
মাহাত্ম্য স্পষ্ট বোঝা যাবে।
ঋগ্বেদ বলছে,
ওম ত্র্যম্বকম যজামহে সুগন্ধিম
পুষ্টিবর্ধনম।
উর্বারূকমিব বন্ধনান মৃত্যুর্মুক্ষীয়
মামৃতাম।।..............................মন্ত্র
বিশ্লেষণ:.............ওম: বলাই বাহুল্য, হিন্দু
সংস্কৃতির প্রায় কোনও মন্ত্রই ওম ছাড়া
শুরু হয় না! বিশেষ করে, শিবমন্ত্র। তাই,
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপের শুরুতেই ওম
উচ্চারণ করে শুদ্ধ করে নিতে হয়
আত্মাকে। আর, লক্ষ্য না করলেই নয়, ওম
উচ্চারণেরও রয়েছে এক বিশেষ পদ্ধতি।
নাভি থেকে উপরের দিকে নিঃশ্বাসের
সঙ্গে বের করতে হয় ওম শব্দের ধ্বনি।
মানে, প্রাণায়াম শুরু হল এই ধ্বনি উচ্চারণ
দিয়েই।
ত্র্যম্বকম: শিবের একটি নাম ত্র্যম্বক।
মানে, যাঁর তিনটি চোখের মধ্যে একটি
সূর্য, একটি চন্দ্র এবং অপরটি অগ্নি। বেঁচে
থাকার জন্য মানুষের এই তিনটিরই তেজ
প্রয়োজন। তাই যে মন্ত্র উদ্ধার করতে
পারে মৃত্যু থেকে, তার অধিকর্তা
ঈশ্বরকে সম্বোধন করা হয়েছে ত্র্যম্বক
নামে।
যজামহে: যজামহে মানে ত্র্যম্বককে যজন
বা উপাসনা করি। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই।
সুগন্ধিম: যে ঈশ্বরকে এই মন্ত্রে বর্ণনা
করা হয়েছে, তিনি সুগন্ধিযুক্ত। এখানে
শিবের সর্বাঙ্গে যে ভস্মের অনুলেপন,
তাকেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে সুগন্ধি
হিসেবে। মানে স্পষ্ট- এই নশ্বর জীবন
একদিন ভস্মেই পরিণত হয়। কিন্তু, মোক্ষ
লাভ করতে পারলে, মৃত্যুভয় কেটে গেলে
ওই ভস্মই হয়ে ওঠে সুগন্ধির সমতুল।
.পুষ্টিবর্ধনম: শিব, যিনি আমাদের মৃত্যু
থেকে রক্ষা করেন, তিনি আমাদের
পুষ্টিবর্ধনেরও সহায়ক। লক্ষ্য করার মতো
বিষয়- পুষ্টি হলেই শরীর নীরোগ হয়। তাই,
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র শিবকে বর্ণনা করেছে
পুষ্টিবর্ধন রূপে।
উর্বারূকমিব: সংস্কৃতে উর্ব শব্দটিকে
নানা ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কেউ
বলেন উর্ব শব্দের অর্থ বিশাল, কেউ বা
বলেন মৃত্যুর মতোই ভয়ানক। আর, আরূকম
মানে যা আমাদের রক্ষা করে এই ভয়
থেকে।
বন্ধনান: বন্ধনান শব্দের মধ্যে বন্ধন শব্দটির
উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বিশাল,
মৃত্যুর মতো ভয়ানক ভয় আসলে বন্ধনেরই
নামান্তর। সেই বন্ধন থেকে আমাদের মুক্ত
করেন মহামৃত্যুঞ্জয় শিব।
মৃত্যুর্মুক্ষীয়: মৃত্যু থেকে উদ্ধার করা!
মামৃতাম: মা শব্দটির অর্থ সংস্কৃতে না!
তাহলে নয় অমৃতাম- শব্দবন্ধের ব্যাখ্যা কি
দাঁড়ায়? এই শব্দবন্ধে বলতে চাওয়া
হয়েছে, শিব আমাদের মৃত্যু থেকে উদ্ধার
করুন, কিন্তু অমৃত থেকে নয়। অমৃত এখানে
জীবনের আনন্দের কথাই বোঝাচ্ছে।
মহামত্যুঞ্জয় মন্ত্র কীভাবে পৃথিবীতে
এল:
শিবপুরাণ বলে, এই মন্ত্রের আবিষ্কর্তা
ঋষি মার্কণ্ডেয়। মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ
করে তিনি উদ্ধার পান মৃত্যুর হাত
থেকে। তার পরে এই মন্ত্র পৃথিবীতে
জনপ্রিয় হয়।
বেশ কিছু পুরাণ জানায়, প্রজাপতি দক্ষ
চন্দ্রকে ক্ষয়রোগের অভিশাপ দিলে শিব-
পত্নী সতী এই মন্ত্র দান করেন চন্দ্রকে।
সোমনাথ-তীর্থে এই মন্ত্র পাঠ করে
ক্ষয়রোগ থেকে মুক্তি পান চন্দ্র।
আবার, স্বয়ং শিব এই মন্ত্র দান
করেছিলেন দৈত্যগুরু শুক্রাচার্যকে। এই
মন্ত্র পাঠ করেই দেবতাদের সঙ্গে যুদ্ধে
মৃত অসুরদের বাঁচিয়ে তুলতেনম শুক্রাচার্য।
তাই, একে মৃতসঞ্জীবনী মন্ত্রও বলা হয়।
যা দেখা যাচ্ছে, ধর্মে বিশ্বাস থাকুক বা
না-ই থাকুক, মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের একনিষ্ঠ
এবং সঠিক উচ্চারণ আমাদের চালনা করে
সুস্থ জীবনের পথে।।
‘ওঁ ত্রম্বকম যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনাম।।
ঊর্বারুকমিব বন্ধনাৎমৃত্যুমক্ষীয় মামৃতাৎ’।।
এই মন্ত্রটির সাথে একটি কাহিণী প্রচলিত আছে , সেটি হল –
মহর্ষি মৃকন্ডু এবং তাঁর পত্নী মরুদবতী পুত্রহীণ ছিলেন । তারা তপস্যা করেন মহাদেবকে সন্তুষ্ট করেন এবং এক পুত্র লাভ করেন , যার নাম হল মার্কন্ডেয় । কিন্তু মার্কন্ডেয়র বাল্যকালেই মৃত্যুযোগ ছিল , বালক মার্কন্ডেয় শিব লিঙ্গের সামনে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করতে লাগলেন , যথা সময়ে যম রাজ এলেন । কিন্তু মহাদেবের শরণে আসা প্রাণকে কেইবা হরণ করতে পারে ! মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র একটি সর্বরোগ হরণকারী মন্ত্র । এই মন্ত্রটি জপ করলে মানুষ সব অশান্তি , রোগপীড়া , ব্যাধি থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হয় । নিরাকার মহাদেবই মৃত্যুমুখী প্রাণকে বলপূর্বক জীবদেহে পুণঃ প্রতিষ্ঠিত করেন এবং অপার শান্তিদান করেন ।
যমরাজ ফিরে গেলেন এবং মার্কন্ডেয় মহাদেবের বরে দীর্ঘায়ু লাভ করলেন । পরে তিনি মার্কন্ডেয় পুরাণ রচনা করলেন । ‘ মহামৃত্যুঞ্জয় যন্ত্র ‘ সামনে রেখে ১২৫০০০ সংখ্যা তে জপ করতে হবে নিষ্ঠা ও পবিত্রতার সহিত জপ করতে হবে ।
শিব পুরানে এই মন্ত্রের এক উপাখ্যান আছে , ধ্রব নামে এক রাজা ছিলেন মহর্ষি দধীচি সাথে রাজার বিরোধ হয় শাস্ত্রের ব্যাখ্যা নিয়ে রাজা তার ব্জ্রের আঘাতে মহামুনি দধীচি টুকরো দেন , দধীচি মরণাপন্ন অবস্থাতে শুক্রাচার্য কে স্মরণ করেন । তিনি এসে দধীচির টুকরো দেহ জোরা করে দেন । এই মৃত্যুসঞ্জীবনী মন্ত্র ভগবান শিবের স্মরণ করতে
আমি সকল বন্ধু ও ভক্তবৃন্দের কাছে অনুরোধ করছি ,সরকারের নির্দেশ পালন করুন ও বাড়িতে স্নান করে ও সন্ধ্যায় ১৮ বার করে মহামৃত্যূজ্ঞয় জপ করুন।দেখুন আপনি ও সকল দেশবাসী ভালো থাকবেন।নিজ নিজ বাড়িতে বসে এই মহামন্ত্র করলে কোন ক্ষতি ও অর্থব্যায় হবে না।লেখা টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন ।আপনার বন্ধুরাউ উপকৃত হবে।
আপনি কি জানতে চান আপনার ভাগ্য ??
আপনার সুযোগ গুলি কি কি জানতে চান ??
আগামি বিপদ থেকে সবধান হতে চান ??
তাহলে এখুনি আপনার জন্ম তারিখ , জন্ম সময় , জন্ম স্থান এই website www.apnc co.in তে গিয়ে ১০০০টাকা দিয়ে registration করুন আপনা কে সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানানো হবে ..ও কুন্ডলী ও প্রতিকার প ঠানো হবে।
ACHARYA KUSH MUKHERJEE
RAMPURHAT CHAKLAMATH BIRBHUM (W.B)
PIN NO 731224
GOLD MEDALIST
WHATSAPP NO 9233172388
CONTACT NO 7001608953
ONLINE PORISEVA DEWA HOI rs 1000/=
MY PAGE NAME IS ASTRO-PALMIST-NEUMEROLOGY CENTER
PLEASE LIKE&SARE
Contact with me :www.apnc.co.in
https://m.facebook.com/Astro-Palmist-Neumerology-Center-1569956439973629/?ref=bookmarks