গ্ৰহপীড়া ও ভাগ্যদোষ ফেরাতে কিছু অতি প্রয়োজনীয় উপায় ।
গ্রহ দোষ দানে শান্তি :-
রবির দান – মানিক্য অভাবে যথাসাধ্য মূল্য, গোধুম, সবৎসাধেনু, কুসুম্ভরঞ্জিত বস্ত্র, গুড়, স্বর্ণ, তাম্র, রক্তচন্দন, রক্তপদ্ম, আতপ তুন্ডুল।
চন্দ্রর দান – রজত পাত্রে তুন্ডুল, কর্পূর, মুক্তা, শুভ্রবস্ত্র, রৌপ্য, হলবহনপোযোগী বৃষ (অভাবে ৩ কাহন কড়ি বা সাধ্য অনুযায়ী মূল্য), ও ঘৃতপূর্ণ কুম্ভ।
মঙ্গলের দান – প্রবাল, গোধুম, মসুরকলাই, অরুণবর্ণ বৃষ, (অভাবে ৫ কাহন কড়ি বা যথাসাধ্য মুল্য), গুড়, স্বর্ণ, রক্তবস্ত্র, করবীপুষ্প, ও তাম্র।
বুধেরদান – নীলবস্ত্র, স্বর্ণ, কাঁসা, মুগ কলাই, পীতবর্ণপুষ্প, দ্রাক্ষা ও হস্তিদন্ত।
বৃহস্পতির দান – চিনি, দারু হরিদ্রা, ঘোড়া(অভাবে ২৫ কাহন কড়ি বা যথাসাধ্য মূল্য), পীতধান্য, পীত বস্ত্র, পোখরাজ, স্বর্ণ,ও লবন।
শুক্রের দান – বিচিত্রবস্ত্র, শ্বেতাশ্ব(অভাবে ২৫ কাহন কড়ি বা যথা সাধ্য মূল্য), ধেনু, হীরক, রৌপ্য স্বর্ণ, সুগন্ধিক দ্রব্য, ঘৃত, ও তুন্ডুল।
শনির দান – মাষকালাই, তৈল, কৃষ্ণতিল, নীলকান্তমণি, মহিষ(অভাবে ৫ কাহন কড়ি বা যথাসাধ্য মূল্য), লৌহ ও কুলুথ কলাই।
রাহুর দান – গোমেধরত্ন, ঘোড়া (অভাবে ২৫ কাহন কড়ি বা যথাসাধ্য মূল্য), নীলবস্ত্র, কম্বল, কৃষ্ণতিল, তৈল, ও লৌহপাত্র।
কেতুর দান – বৈদূর্য্যমণি, মৃগমদ, তিল, তিলতৈল, কম্বল ও খড়্গ।
বিঃদ্রঃ –গ্রহ সর্ম্পকীয় সমস্ত দান ও দক্ষিনা ভক্তি সহ শুদ্ধ মন্ত্র পাঠ ক্রমে গ্রহ বিপ্রর হাতে তুলে দেয়া কর্ত্তব্য অন্যাথা নিষ্ফল হইবে।
গ্রহ শান্তি :-
রবিগ্রহ শান্তির উপায় – প্রতিদিন সকালে স্নান করে তামার ঘটিতে জল নিয়ে সূর্য্য দেবকে ওঁ আদিত্যায় নমঃ / ওঁ ঘৃণী সূর্য্যায় নমঃ - মন্ত্র ৫/৭ বার উচ্চারণ করে জল অর্পণ করিলে সূর্য্যদেব খুশি হন এবং ধীরে ধীরে জাতকেও খুশী নজরে দেখতে থাকেন ।
চন্দ্রগ্রহ শান্তির উপায় – কোন বিধবা মায়েদের আশ্রমে গিয়ে ভক্তিমনে মায়েদেরকে আতপচাল,দুধ, চিনী, বা পারিলে বস্ত্র দান করে মায়েদের চরণ স্পর্শ করে আশির্বাদ নিয়ে খুশী করালে চন্দ্রগ্রহ খুশী হয়ে জাতককে ধীরে ধীরে শান্তি প্রদান করেন এবং চন্দ্রদোষ হতে মুক্তি দেন।
মঙ্গলগ্রহ শান্তির উপায় – প্রতি মঙ্গলবার বজরঙ্গবলী মন্দিরে পূজো-পাঠ উপাসনা করে লোককে মিষ্টিমুখ করালে হনুমান ও মঙ্গলগ্রহ খুশী হয়ে ধীরে ধীরে জাতকের বিপদ মুক্ত করে শান্তি প্রদান করেন। কিন্তু কোন কোন জাতকের উপর পূর্ব্ব-জন্মের কর্মে মঙ্গলের পিতৃ-ঋণ বা দোষ থাকে তার উপায় জন্মপত্রিকার উপর নির্ভর করবে।
বুধপ্রহ শান্তির উপায় – প্রতিদিন সকালে স্নান করে ভক্তি ভাবে বুধগ্রহর নাম অনুসরন করে কলাগাছে জলঅর্ঘ দিবেন। নবগ্রহ মন্দিরে আস্ত মুগ-কলাই ও সবুজ ফল দান করিবেন। এবং ছোট কোন বাচ্চাদের হাতে আস্ত ফল দান করিলে বুধগ্রহ খুশী হয়ে জাতককে শুভফল প্রদান করিবেন।
বৃহস্পতির দোষে শান্তির উপায় – ছোলারডাল , Vhojya , পাকা কলা , হলুদবস্ত্র - ব্রাহ্মনকে ভক্তি ভাবে দানকরে চরণস্পর্শ করে আশির্বাদ নিলে গুরু বৃহস্পতিগ্রহ খুশী থাকেন এবং জাতককে বিপদ মুক্তির রাস্তা দেখান ও শান্তি প্রদান করেন।
শুক্র গ্রহর দোষে শান্তির উপায় – শুক্র গ্রহর দোষ থাকিলে জাতক জল দান করা খুবই শুভফল দায়ক যত পারা যায় জল দান করুন কিন্তু শ্রদ্ধাভক্তি মনে। দেখবেন শুক্র গ্রহ দেব ধীরে ধীরে আপনাকে শুভফল প্রদান করিবেন এবং আপনার সময় পরিবর্তনের সুযোগ দেখাদেবে।
শনি গ্রহর দোষ থাকিলে – প্রতি শনিবারে স্নান সেড়ে শনি মন্দিরে কিছু প্রসাদ চরাবেন সঃতেল লোহার ত্রিশুল কালো কাপড় মন্দিরে দান করিবেন এবং অশথ্ব গাছের মূলে চিনী গুড় মিশ্রিত জল শনিদেবের নাম বা মন্ত্র উচ্চারন করে অর্পণ করে থাকলে আপনার দূঃখ দূর্দশা ধীরে ধীরে মোচন হবে এবং শনিদেব খুশীহলে আপনার প্রতি শুভদৃষ্টিতে নজর দেবেন তবেই জাতক সুখী থাকিবেন।
রাহু গ্রহর দোষ থাকিলে – জাতক শনিবারে মাঝে মাঝে ইক্ষু গুড় দান করতে হয় এবং নিজে গুড় বা গুড়ের যে কোন জিনিষ না খাওয়াটা ভালো। সূর্য্যগ্রহণের দিন নারিকেল জলে ভাসিয়ে দিতেহয়। বাড়ীতে রাত্রিতে নারিকেল বাদাম মাংস মশলা ভাজা বা খাওয়া খুবই ক্ষতিকর হয়।তার জন্য এ সমস্ত ত্যাগ করে সর্বদা হনুমানজীর পুজোপাঠে মন দিলে খুবই শান্তি পাবেন।
কেতু গ্রহর দোষ থাকিলে – জাতক শনিবারে মাঝে মাঝে সাদাকালো কম্বল, ছাগল এবং
ধোঁয়া-বর্ণের কাপড় কলা, দান করিলে কেতুগ্রহ খুশী হয়ে জাতককে শুভফল প্রদান করেন।
মানব জীবন :-
আমরা মানুষ,এই পৃথিবীতে মায়ের গর্ভে জন্ম ধারন করার সময়েই আমাদের ভাগ্যলিপি স্বয়ং ভগবানের খাতায় লিপিবদ্ধ হয়। তার পরেই সেই খাতার লিপিবদ্ধ হিসাব মতেই আমরা এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহন করি এবং সেই খাতার মতেই আমাদের জীবন শুরু হয় ও আমরা বেচে থাকা দিনগুলি অতিবাহিত করি। তবে ভগবানের এই ভাগ্যলিপি খাতার নিয়ম অনুসারে মানব জীবন পরিচালনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন নবগ্রহ দেবতাকে। এবং এই নবগ্রহ দেবতা সকল সেই ভাগ্যলিপি শাস্ত্রর বিধিমতে আমাদের গত হওয়া ও পূর্ব্বজন্মের কর্মফল এবং বর্তমানের কর্মফলের হিসাবে এই সংসারের সুখ দূঃখ আমাদেরকে প্রদান করেন আর আমরা তাই ভোগ করি। এই মনুষ্য জনমের সুখশান্তি বৃদ্ধি এবং দূঃখ দূর্দশা নাশ করার উদ্দ্যেশে আজকের মহান জ্যোতিষী গন গ্রহ দেবতাদের সন্তুষ্ট করার জন্যে মানবকে সদুপদেশ ও প্রতিকারের সুব্যাবস্থা বা রত্ন ধারনের পরামর্শ দিয়ে মানব কল্যান কাজে এগিয়ে চলছেন।
বিঃদ্রঃ=জীবনের ভালোমন্দ জানার উদ্যেশ্যে যে কোন বিশেষ জ্যোতিষ দ্বারা পরীক্ষা ও শান্তি সরুপ প্রতিকার করা বিশেষ প্রয়োজন। সময় থাকতে চেষ্টা করুন অবহেলায় দিন কাটালে লোকসান নিজেরই হতেপারে।
JOTISH ACHARYA KUSH MUKHERJEE
RAMPURHAT CHAKLAMATH BIRBHUM