অম্বুবাচী ও জোতিষিক ব্যাখ্যা
প্রতিবেদন টি পড়বেন।ভালো লাগলে মন্তব্য করে জানাবেন।
https://youtu.be/rGxD_LRnR44
অম্বুবাচী ২০২১ এর দিন, তিথি ও নেপথ্যের কিছু কাহিনি
অম্বুবাচী হিন্দু ধর্মের একটি অতি প্রাচীন পার্বণ। এপার্বণ ঘিরে যেমন ধার্মিক বিশ্বাস রয়েছে তেমনই জড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতিকে আরাধনা করার একটি দিক। এই পার্বণ ঘিরে অসমের কামাক্ষ্যা মন্দিরে বিশাল মেলার আয়োজন হয়। এই সময় বিশেষ তন্ত্রও উদযাপিত হয়। একনজরে এই তিথি নিয়ে কিছু বিশেষ তথ্য দেখা যাক।
কবে পড়ছে অম্বুবাচী?
মঙ্গলবার ২২ জুন পড়ছে অম্বুবাচী। সেদিন বাংলা ক্যালেন্ডার মতে ৭ আষাঢ়। এমন দিনে দুপুর ২.০৭ মিনিট থেকে অম্বুবাচী পড়ছে। টানা তিনদিন ধরে চলবে এই পার্বণ। ২০২১ সালে এই তিথি শেষ হচ্ছে ২৫ জুন শুক্রবার। অর্থাৎ ১০ আষাঢ়। ২৫ জুন রাত ২:৩০ মিনিটে ছাড়ছে অম্বুবাচী।
লোকবিশ্বাস মতে, আষাড় মাসে মৃগ শিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা ঋতুময়ী হয়। এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়। বাঙলা প্রবাদে রয়েছে ‘কিসের বার কিসের তিথি, আষাঢ়ের সাত তারিখ অম্বুবাচী।’ এদিন থেকেই হয় অম্বুবাচী শুরু। জ্যোতিষ শাস্ত্রে বলা হয়েছে, সূর্য যে বারের যে সময়ে মিথুন রাশিতে গমন করেন, তার পরবর্তী সেই বারের সেই কালে অম্বুবাচী হয়। অর্থাৎ, পৃথিবী এই সময়ে ঋতুমতী হন। অম্বুবাচীর সময় ভুলেও এই কাজ গুলো করবেন না, চরম অনর্থ
অম্বুবাচীর তিন দিন পর্যন্ত কোনও ধরনের মাঙ্গলিক কাজ করা যায়না। চতুর্থ দিন থেকে কোনও বাধা থাকেনা। অম্বুবাচীর সময় হাল ধরা, বৃক্ষরোপণ, গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা নিষিদ্ধ, এই সময়ে মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বারও বন্ধ থাকে।
অম্বুবাচীরর তিন দিনের ব্রত চলাকালীন কোনও গরম খাবার খাওয়া চলবে না। ব্রত শুরু হওয়ার আগে যে রান্না করেছিলেন, তাই তিনদিন ধরে অল্প অল্প করে খেতে হবে। />Photo Source: Collected
এই সময়ে কোনও বিশেষ পুজো করা বারণ। কোনও বছর যদি এই সময় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা পড়ে, তবে তা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই হতে পারে। কারণ, এই সময়ে নিত্যকর্ম হবে, কাম্য কর্ম হবে না। রথযাত্রা নিত্যকর্ম। যাঁরা শাক্তমন্ত্রে দীক্ষিত, তাঁরা জপ করতে পারেন। এই সময়ে গুরু বা গুরুমা পূজা করতে পারবেন।
সমস্ত দেবীর মূর্তি, ছবি বা পট লাল কাপড়ে ঢেকে রাখুন। ভুলেও মূর্তি বা পট স্পর্শ করবেন না।
পূজার সময় কোনও মন্ত্র পাঠ করবেন না, কেবল ধূপ-দীপ দেখিয়ে প্রণাম করুন।
অসমের কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচী উপলক্ষ্যে উৎসব পালন করা হয়। সূর্যের দক্ষিণায়নের দিন থেকে তিন দিন অর্থাৎ আষাঢ়ের ৭ তারিখ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই পার্বন
বিশেষ উৎসব পালন করা হয়। হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে বলা হয়, ধরিত্রী মা ঋতুমতী হওয়ার কারণে ভূমিকর্ষণ ও বৃক্ষরোপণ করা নিষিদ্ধ। মনে করা হয় এই তিন দিনে গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ও অন্যান্য শুভ কাজ করা উচিত নয়। এছাড়াও আরও যা যা বলা হয়
কি কি করবেন না
১) হিন্দু শাস্ত্র মতে, এই সময়ে অন্য কোনও বিশেষ পুজোর আয়োজন না করাই ভাল। তবে কোনও কোনও বছর এই সময়ে রথযাত্রার উৎসব পড়লে, তা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই করা যেতে পারে। কারণ রথযাত্রাকে নিত্যকর্ম হিসাবেই ধরা হয়।
২) যাঁরা আদি শক্তির বিভিন্ন রূপ পুজো করেন, যেমন মা কালী, দেবী দুর্গা, দেবী জগদ্ধাত্রী, মা বিপত্তারিণী,মা শীতলা, দেবী চণ্ডীর মূর্তি বা পট পূজা করেন, তাঁরা এই সময়ে মূর্তি বা পট লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখবেন।
৩) অম্বুবাচীর দিনগুলিতে পুজোর সময়ে কোনও মন্ত্র পাঠ করবেন না, কেবল ধূপ ও দ্বীপ সহযোগে ঠাকুর প্রণাম করবেন।
৪) অম্বুবাচীতে দেবীর মূর্তি বা পট কখনওই স্পর্শ করা উচিত নয় বলে মনে করে হিন্দু শাস্ত্র।
৫) অম্বুবাচীতে গুরুর পুজা চলতে পারে। কারওর গুরু যদি নারী হন, অর্থাৎ গুরুমা হন, তাহলেও পূজা চলতে পারে, তাতে কোনও দোষ নেই বলে মনে করে হিন্দুশাস্ত্র ।
৬) যাঁরা শাক্তমন্ত্রে দীক্ষিত, তাঁরা এইসময়ে গুরুমন্ত্র জপ করতে পারবেন। হিন্দুশাস্ত্র মতে জপে কোনও দোষ নেই বলে মনে করা হয়।
যেহেতু এই কয়েকদিন মা ঋতুমতী থাকেন তাই বলা হয় এই সময় যৌন সংসর্গও অনুচিত। মা ঋতুমতী হলে তবেই ধরিত্রী শস্য শ্যামলা হবে, ফসল ফলবে। ধরিত্রী মায়ের সঙ্গে মেয়েদেরও তুলনা করা হয়। সে কারণেই এই কয়েকদিন যৌন সংগম থেকে বিরত থাকাই ভালো। কারণ মেয়েরা ঋতুমতী হলে তবেই সন্তান ধারণে সক্ষম হন। মেয়েরাই তো আলোর উৎস। এছাড়াও কামাক্ষ্যা কামের দেবী হিসেবে পরিচিত।
॥ কামাখ্যা ধ্যানং এবং স্তোত্রং চ ॥
=====================
এই তিন দিন অম্বুবাচী ব্রত যারা করেন ও সকল গৃহবধূ এই ধ্যান ও স্তোত্র পাঠ করলে সংসারের মঙ্গল ও সন্তান রা ভা থাকে।
কামাখ্যা ধ্যানম্
====================
রবিশশিয়ুতকর্ণা কুংকুমাপীতবর্ণা
মণিকনকবিচিত্রা লোলজিহ্বা ত্রিনেত্রা ।
অভয়বরদহস্তা সাক্ষসূত্রপ্রহস্তা
প্রণতসুরনরেশা সিদ্ধকামেশ্বরী সা ॥ ১॥
অরুণকমলসংস্থা রক্তপদ্মাসনস্থা
নবতরুণশরীরা মুক্তকেশী সুহারা ।
শবহৃদি পৃথুতুঙ্গা স্বাঙ্ঘ্রিয়ুগ্মা মনোজ্ঞা
শিশুরবিসমবস্ত্রা সর্বকামেশ্বরী সা ॥ ২॥
বিপুলবিভবদাত্রী স্মেরবক্ত্রা সুকেশী
দলিতকরকদন্তা সামিচন্দ্রাবতংসা ।
মনসিজ-দৃশদিস্থা য়োনিমুদ্রালসন্তী
পবনগগনসক্তা সংশ্রুতস্থানভাগা ।
চিন্তা চৈবং দীপ্যদগ্নিপ্রকাশা
ধর্মার্থাদ্যৈঃ সাধকৈর্বাঞ্ছিতার্থা ॥ ৩॥
কামাখ্যা স্তোত্রম্
=======================
জয় কামেশি চামুণ্ডে জয় ভূতাপহারিণি ।
জয় সর্বগতে দেবি কামেশ্বরি নমোঽস্তু তে ॥ ১॥
বিশ্বমূর্তে শুভে শুদ্ধে বিরূপাক্ষি ত্রিলোচনে ।
ভীমরূপে শিবে বিদ্যে কামেশ্বরি নমোঽস্তু তে ॥ ২॥
মালাজয়ে জয়ে জম্ভে ভূতাক্ষি ক্ষুভিতেঽক্ষয়ে ।
মহামায়ে মহেশানি কামেশ্বরি নমোঽস্তু তে ॥ ৩॥
ভীমাক্ষি ভীষণে দেবি সর্বভূতভয়ঙ্করি ।
করালি বিকরালি চ কামেশ্বরি নমোঽস্তু তে ॥ ৪॥
কালি করালবিক্রান্তে কামেশ্বরি হরপ্রিয়ে ।
সর্বশাস্ত্রসারভূতে কামেশ্বরি নমোঽস্তু তে ॥ ৫॥
কামরূপপ্রদীপে চ নীলকূটনিবাসিনি ।
নিশুম্ভ-শুম্ভমথনি কামেশ্বরি নমোঽস্তু তে ॥ ৬॥
কামাখ্যে কামরূপস্থে কামেশ্বরি হরিপ্রিয়ে ।
কামনাং দেহি মে নিত্যং কামেশ্বরি নমোঽস্তু তে ॥ ৭॥
বপানাঢ্যমহাবকত্রে তথা ত্রিভুব