মহাকালী
ভদ্রকালি নমস্তুভ্যং মহাকালি নমোঽস্তুতে।
চণ্ডি চণ্ডে নমস্তুভ্যং তারিণি বরবর্ণিনি।।
*************************************
:- মহাবিদ্যা আদ্যাশক্তি পরমেশ্বরী কালিকা:-
***************************************
আজ প্রথম মহাবিদ্যা জগজ্জননী শ্রী শ্রী দক্ষিণা কালীর আরাধনা।
দেবী কালিকার দক্ষিণ চরণ শবরূপী শিবের বক্ষে থাকে বলে তাঁকে দক্ষিণা কালী বলা হয়। আবার তাত্ত্বিক গনের মতে দক্ষিণ দিকের অধিপতি হলেন যম , তিনি কালীকে দর্শন মাত্র দুরে পলায়ন করেন তাই দেবী কালীকাকে দক্ষিণা কালী বলা হয়।
ঋগ্বেদে বলা হয়েছে তিনি আদি পরাশক্তি, পরম ব্রহ্ম , তিনি সকল শক্তির চূড়ান্ত প্রকাশ,সমস্ত জীবের জননী , তিনি মোক্ষ প্রদান কারি।
তাঁর বর্ণ কালো কারন তিনি সমস্ত বর্ণের অতিত। কালো রঙ সমস্ত বর্ণের অনুপস্থিতির কারণ।
মাথায় ঘন কালো মুক্ত কেশরাশি বৈরাগ্যের প্রতিক।
তাঁর ত্রিনয়ন চন্দ্র ,সূর্য , ও অগ্নির স্বরুপ সমস্ত অন্ধকার বিনাশ কারি।
তিনি তাঁর ত্রিনয়ন দ্বারা ভূত ,ভবিষ্যত , বর্তমান দর্শন করেন।
তিনি তাঁর জিহ্বা শ্বেতশুভ্র দন্ত দ্বারা চেপে রেখেছেন।
জিহ্বা রক্তবর্ণ আসক্তি , লোলুপতা ও রজগুনে প্রতিক।
শ্বেতবর্ণের দন্তরাশি সত্ত্ব গুনের প্রতিক। তিনি সত্ত্ব গুনের দ্বারা রজ গুনকে দমন করে রেখেছেন।
তাঁর গলায় ৫০ টি নরমুণ্ড সজ্জিত মালা শোভা বর্ধন করেছে। এই ৫০ টি মুণ্ডের মধ্যে , স্বরবর্ণ ১৪ টি ব্যাঞ্জন বর্ণ ৩৬ টি যাহা সংস্কৃত বর্ণমালার সমাহার। তিনি মুর্খতা ও জড় বুদ্ধি বিনাশিনি ও কবিত্ব প্রদান কারিণী।
তিনি চতুর্ভূজা , বামদিকের উর্ধহস্তে খড়্গ জ্ঞানের প্রতিক, নিচের হস্তে সদ্যছিন্ন নরমুণ্ড অহংকারের প্রতিক। তিনি জ্ঞান রূপ খড়্গের দ্বারা অহংকার কে দমন করেন।
তাঁর খড়্গে একটি চক্ষু থাকে সেটি হল প্রজ্ঞার প্রতিক।
দক্ষিণ দিকের উর্ধ হস্তে বর মুদ্রা, নিম্ন হস্তে অভয় মুদ্রার দ্বারা ভক্ত দের বরাভয় প্রদান করেন।
তাঁর একদিক অহংকার ও অজ্ঞানতার ধংশ ও অপর দিকে সৃষ্টি , স্থিতি ও পালনের প্রতিক।
তাঁর কোমরে মানুষের কাটা হাতের মেখলা বা কটিবন্ধ। হাত হলো কর্মের প্রতিক, কোমর শক্তি ও দৃঢ়তার প্রতিক , যা শরীরের সমস্ত ভার বহনে সমর্থ। তিনি কর্মে ও শক্তিকে নিজের আয়ত্ত্বে রেখেছেন । তিনি সমস্ত কর্মের অধিষ্ঠাত্রি। সমস্ত কর্মের ফল প্রদান কারিনী।
তাঁর পদতলে শবরূপে শিব শায়িত।
শিব হলেন স্থিতি , দেবী হলেন গতি , শিব হলেন ব্রহ্ম চৈতন্য , দেবী হলেন ব্রহ্ম শক্তি ,
তাঁদের মিলিত শক্তিই সমস্ত সৃষ্টির উৎস।
দেবী কালিকা সৃষ্টি , স্থিতি , ও প্রলয়ের প্রতিক।
তাঁর যোনি সৃষ্টির প্রতিক , স্তনযুগল স্থিতির প্রতিক, এবং জিহ্বা প্রলয়ের প্রতিক।
তিনি সর্বপ্যাপিনী তাই তিনি নিরাবরণা।।
সেই করুণাময়ীর কাছে আমাদের সর্ব্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করি।
কালিকে কৌষিকী ত্বংহি জগদ্বন্দে সনাতনী।
সুরপ্রিয়ে বিশালাক্ষী কালিকে পরমেশ্বরী।।
***************************************