শ্রীজগন্নাথস্ত্রোত্রম্
...........................
কদাচিৎ কালিন্দীতটবিপিনসঙ্গীতকরবো
মুদাভীরীনারীবদনকমলাস্বাদমধুপঃ ।
রমাশম্ভুব্রহ্মাসুরপতিগণেশার্চিতপদো
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ১
যিনি কখনও লীলাচ্ছলে সানন্দে যমুনাপুলিনস্থ অরণ্যরাজিকে সঙ্গীত দ্বারা মুখরিত করেন, যিনি গোপনারীর মুখপদ্মের মধু আস্বাদনকারী ভ্রমর, যাঁহার চরণ লক্ষ্মী শিব ব্রহ্মা ইন্দ্র ও গণেশের দ্বারা পূজিত, সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ১
ভুজে সব্যে বেণুং শিরসি শিখিপুচ্ছং কটিতটে
দুকুলং নেত্রান্তে সহচরকটাক্ষং বিলসয়ন্ ।
সদা শ্রীমদবৃন্দাবনবসতিলীলাপরিচয়ো
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ২
যিনি বামহস্তে বংশী, মস্তকে ময়ূরপুচ্ছ, কটিতে পীতাম্বর , নয়নপ্রান্তে স্বাভাবিক কটাক্ষ ধারণ করিয়া শ্রীবৃন্দাবনে নিত্য অবস্থানরূপ লীলাদ্বারা আত্মপরিচয় প্রদান করেন , সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ২
মহাম্ভোধেন্তীরে কনকরুচীরে লীলশিখরে
বসন্ প্রাসাদান্তঃ সহজবলভদ্রেণ বলিনা ।
সুভদ্রামধ্যস্থঃ সকলসুরসেবাবসরদো
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ৩
যিনি মহাসাগরের তীরে, সুবর্ণাভ নীলাচলশিখরে, প্রাসাদমধ্যে সুভদ্রাকে মধ্যভাগে স্থাপন পূর্বক সহোদর বীর বলভদ্রের সহিত বাস করিয়া সকল দেবতাকে সেবার অবসর দান করেন,সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ৩
কৃপাপারাবারঃ সজলজলদশ্রেণিরুচিরো
রমাবাণীরামঃ স্ফুরদমলপঙ্কেরুহমুখঃ ।
সুরেন্দ্রৈরারাধ্যঃ শ্রুতিগণশিখাগীতচরিতো
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ৪
যিনি দয়াসিন্ধু, যাঁহার কান্তি জলপূর্ণ মেঘমালার ন্যায় শ্যামল, যিনি লক্ষ্মী ও সরস্বতীর আনন্দনিধান , যাঁহার বদন বিকশিত অমল কমলসদৃশ , যিনি দেবনায়কগণকর্তৃক আরাধিত, যাঁহার লীলা উপনিষৎসমূহে কীর্তিত , করেন,সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ৪
রথারূঢ়ো গচ্ছন্ পথি মিলিতভুদেবপটলৈঃ
স্তুতিপ্রাদুর্ভাবং প্রতিপদমুপাকর্ণ্য সদয়ঃ ।
দয়াসিন্ধুর্বন্ধুঃ সকলজগতাং সিন্ধুসুতয়া
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ৫
যে কৃপানিধি ও নিখিল জগতের বন্ধু, লক্ষ্মীর সহিত রথে আরোহণপূর্বক পথে গমনকালে প্রতিপদে সম্মিলিত ব্রাহ্মণগণকৃত স্তব কীর্তন শ্রবন করিয়া করুণাযুক্ত হন- সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ৫
পরব্রহ্মাপীড়ং কুবলয়দলোৎফুল্লনয়নো
নিবাসী নীলাদ্রৌ নিহতচরণোহনন্তশিরসি ।
রসানন্দো রাধাসরসবপুরালিঙ্গনসুখো
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ৬
যিনি প্রজাপতির শিরোভূষণস্বরূপ, যাঁহার নয়ন পদ্মপলাশের ন্যায় বিকশিত, যিনি নীলাদ্রীতে বাস করেন, যিনি অনন্তনাগের মস্তকে চরণ স্থাপন করেন, যিনি প্রেমরসে বিভোর, যিনি শ্রীরাধার প্রেমময় দেহ আলিঙ্গনে আনন্দিত, সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ৬
ন বৈ যাচে রাজ্যং ন চ কনকমাণিক্যবিভবং
ন যাচেহং রম্যাং সকলজনকাম্যাং বরবধূম্ ।
সদা কালে কালে প্রমথপতিনা গীতচরিতো
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ৭
আমি রাজ্য চাহি না, স্বর্ণ ও মাণিক্যাদি ঐশ্বর্যও চাহি না, সর্বজনের স্পৃহণীয় উত্তব বধূও চাহি না; মহাদেবের দ্বারা লীলা সর্বদা কীর্তিত হয়, সর্ব সময়ে সেই সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ৭
হর ত্বং সংসারং দ্রুততরমসারং সুরপতে
হর ত্বং পাপানাং বিততিমপারাং যাদবপতে ।
অহো দীনানাথং নিহিতমচলং নিশ্চিতপদং
জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে ।। ৮
হে সুরনাথ, তুমি অতি সত্বর ( আমার নিকট হইতে ) নিঃসার সংসার দূর কর ; হে যদুপতি , তুমি এই অকূল পাপসাগর নাশ কর । আহা, দীন জনের আকাঙ্খানীয় কি শাশ্বত নিশ্চিত মোক্ষধামই না এখানে স্থাপিত হইয়াছে ! সেই প্রভু জগন্নাথ আমার দৃষ্টিগোচর হউন । ৮
জগন্নাথাষ্টকং পুণ্যং যঃ পঠেৎ প্রযতঃ শুচিঃ ।
সর্বপাপবিশুদ্ধাত্মা বিষ্ণুলোকং স গচ্ছতি ।। ৯
যে সংযত ও শুদ্ধ হইয়া পবিত্র জগন্নাথষ্টক পাঠ করে, তাহার চিত্ত সর্বপাপ হইতে মুক্ত হয় ও সে বিষ্ণুলোকে গমন করে । ৯